ঢাকায় বাইরে বের হওয়ার এই দলে দেখা গেল মরিয়ম, মুন্নী ও দিনাকে। বৃষ্টিস্নাত ভরদুপুরে ফাঁকা ঢাকায় অনেকটা নির্জন ধানমণ্ডি লেকের পাশে বসে তিন শিশু বসে গ্ল্প করছিল। হালকা খাবারও খাচ্ছিল।
বুধবার কোরবানির ঈদের দিনে রঙিন জামায় তিনজনের চোখে মুখে ছিল আনন্দের ছটা; সঙ্গে উদ্বেগও ছিল, মুক্ত হাওয়ায় বেড়ানোর সময় বুঝি বা ফুরিয়ে যায়।
কাছে গিয়ে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করতেই একজন আরেকজনের নাম জানিয়ে দিল। তারা তিনজনই একই স্কুলে পড়ে, তৃতীয় শ্রেণীতে।
মরিয়ম বলেন, “আজ তো ঈদ। তাই সকাল সকাল আমরা ঘুরতে বেরিয়েছি। আমার মা এসেছে আমাদের সঙ্গে। একটু দূরে রয়েছে, ওই দিকে।”
ছবি তোলার চেষ্টা করতেই লজ্জা পেয়ে যায় তিনজনই; মুখও ঘুরিয়ে নেয়।
“আমরা বেড়াতে এসেছি। আজ খুব ভালো লেগেছে। রাস্তা ফাঁকা, এখানেও ফাঁকা। তিনজনে দৌড়াদৌড়ি করেছি,” বলে দিনা।
করোনাভাইরাস মহামারী নেমে আসার পর দেড় বছর ধরেই স্কুল বন্ধ, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিধি-নিষেধে বাইরে বের হতে না পেরে নগরীর শিশুদের এখন দমবন্ধ অবস্থা।
ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও কোরবানির ঈদ ঘিরে বিধি-নিষেধ শিথিল রয়েছে কয়েক দিনের জন্য। তবুও ঘর থেকে বের হওয়াকে নিরুৎসাহিতই করা হচ্ছে।
তারপরও ঈদের খুশিতে কেউ কেউ বের হচ্ছেন মুক্ত হাওয়ায়। ঈদের দিন গড়াতে গড়াতে ধানমণ্ডিতে শিশু-কিশোরদের ভিড়ও বাড়তে দেখা গেল। লেকে ভাসা ছোট ডিঙিতে চড়তে আনন্দে মাততে দেখা গেল একদলকে।
বোট রাইডিংয়ের তদারকিতে থাকা মোহাম্মদ সুজন জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য মানুষের আনাগোনাই কমে গেছে। তেমন লোকজন আসে না।
কোরবানির ঈদে সকাল থেকে দুপুর অবধি ভিড় হয় না জানিয়েই তিনি বলেন, সন্ধ্যার দিকে মানুষের আনাগোনা কিছুটা বাড়ে।
রবীন্দ্র সরোবার এলাকায় সাধারণত মানুষের ভিড় দেখা যায়। কিন্তু এই ঈদে তা দেখা গেল না।
লেকে ঘুরতে আসা দুলাল মিয়া বলেন, “করোনাকালে মানুষ তো বের হতে চায় না। আর এ ঈদে তো মানুষ কোরবানি নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাই সকালে-দুপুরে লোকজন কম।”