বুধবার সকাল ৭টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে এবারের কোরবানির ঈদের প্রধান জামাত হয়। মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান তাতে ইমামতি করেন।
নামাজ শেষে মোনাজাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতদের জন্য দোয়া করা হয়। দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করা হয়। ‘বালা মুসিবত’ থেকে সুরক্ষা চাওয়া হয় আল্লাহর কাছে।
মহামারীর ষোল মাসে গত বছর দুটি ঈদ এবং এ বছর রোজার ঈদ হয়েছে এবার আগে। এবার কোরবানির ঈদ হচ্ছে এমন এক সময়ে যখন সংক্রমণের সবচেয়ে বাজের সময়টি পার করছে বাংলাদেশ।
গত রোজার ঈদের তুলনায় বুধবার ঈদের জামাতে মানুষের সংখ্যা ছিল তুলনামূলকভাবে কম।
নামাজের আগে মসজিদে মাইক থেকে বারবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে জামাতে অংশ নিতে বলা হয়। করা হয় বিভিন্ন বয়ান, শোনানো হয় বিভিন্ন হাদিস।
প্রথম জামাতে যোগ দিতে সকাল সাড়ে ৬টা থেকেই বায়তুল মোকাররমে আসতে শুরু করে মানুষ। মসজিদের বাইরে ছিল নামাজে আসা মানুষের দীর্ঘ লাইন।
ঈদ জামায়াতে শিশু ও বৃদ্ধদের অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করা হলেও দেখা গেছে অনেকে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ঈদের নামাজে এসেছেন। প্রবীণদেরও বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে দেখা গেছে।
সবাই স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম মানছেন কি না দেখতে মসজিদের প্রবেশ পথে পুলিশ ছিল।
বায়তুল মোকাররমে প্রথম জামাতে ঈদের নামাজ পড়েন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস।
নামাজ শেষে সবাইকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সবাই কোরবানির বর্জ্য পরিচ্ছন্ন কর্মীর হাতে দেবেন। অনেক পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োজিত। সুতরাং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ হবে।”
নিরাপত্তা জন্য বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি র্যাবের গাড়িও দেখা যায়।
মতিঝিল বিভাগের পুলিশের উপকমিশনার আব্দুল আহাদ বলেন, “পুরো এলাকায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার কিংবা দিনাজপুরের গোর-ই শহীদ ময়দানেও এবার ঈদের জামাত হচ্ছে না।
ঈদের আগের দিন করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে কেড়ে নিয়েছে ২oo জনের প্রাণ। এ পর্যন্ত দেশে মোট ১৮ হাজার ৩২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছে মোট ১১ লাখ ২৮ হাজার ৮৮৯ জন।
ঈদের আচার পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধিতে যেন ঢিল না পড়ে, ঈদের শুভেচ্ছা বাণীতে সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, “এ বছর এমন একটা সময়ে ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চরমভাবে বিপর্যস্ত। করোনার কারণে দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকা আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।”
তিনি বলেন, “জীবন বাঁচানো প্রথম অগ্রাধিকার হলেও জীবন বাঁচিয়ে রাখতে জীবিকার গুরুত্বও অনস্বীকার্য। কঠিন এ সময়ে আমি দেশের আপামর জনগণের প্রতি কুরবানির মর্মার্থ অনুধাবন করে সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হয়ে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।”