‘টিকটক হৃদয়’ চক্রের শিকার আরেক কিশোরী ভারতে, বাবার মামলা

ভারতের বেঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় আলোচনায় আসা ‘টিকটক হৃদয় বাবু’ চক্রের মাধ্যমে পাচার হওয়া আরেক নিখোঁজ কিশোরীর বিষয়ে জানতে পেরেছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2021, 07:58 PM
Updated : 8 July 2021, 07:58 PM

ওই কিশোরী এখনও ভারতে অবস্থান করছে বলে তার বাবা মেয়েকে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরীর বাবা সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. মনা রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলাও দায়ের করেছেন।

পাচার হওয়া অন্যান্য মেয়ের সঙ্গে তার মেয়ে এখনও বেঙ্গালুরুতে আছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন তিনি।

হাতিরঝিল থানার ওসি আব্দুর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক তার মেয়ে টিকটক হৃদয় বাবুর মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

"আমরা তার অভিযোগ গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি।"

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মো. মনার পাচার হওয়া কিশোরী কন্যা বর্তমানে ভারতের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে আছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।

এই বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মো. মনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সম্প্রতি টিকটক হৃদয় চক্রের খপ্পর থেকে পালিয়ে আসা এক তরুণী তার নির্যাতনের কথা সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরে। এতে তার মত পাচার হওয়া আরও কয়েকজনের নাম বলে। যাদের মধ্যে তার মেয়ের নাম আছে।

বেঙ্গালুরুতে ভাইরাল হওয়া ভিডিও থেকে নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করে তাদের ছবি প্রকাশ করেছিল আসাম পুলিশ

“এরপর ওই তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ছবি দেখানোর পর আমার মেয়েকে চিনতে পারে। তার কাছ থেকে জানতে পারি ব্যাঙ্গালুরে আরও কয়েকটি পাচার হওয়া মেয়ের সাথে আমার মেয়েকেও সে দেখেছে।"

মামলার এজাহারে মো. মনা অভিযোগ করেন, “তার বাসা বেগুনবাড়িতে। দুই মেয়ে এবং এক ছেলেকে নিয়ে তাদের মা মাঝে মধ্যে হাতিরঝিল ঘুরতে যেতেন। সেখানেই নবম শ্রেণি পড়ুয়া বড় মেয়ের সঙ্গে টিকটক হৃদয় বাবুসহ কয়েকজন ছেলেমেয়ের পরিচয় হয়।

"তাদের সাথে মিশতে নিষেধ করা হলে আমার মেয়ে কথা দেয় আর মিশবে না। এরই মধ্যে আধাঘণ্টার কথা বলে গত ১৭ মার্চ বিকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।"

মামলায় রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়সহ চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলায় বলা হয়, সম্প্রতি এক তরুণী টিকটক হৃদয় বাবুর খপ্পরে পড়ে ভারতে পাচার হওয়ার পর নানা নিপীড়নের শিকার হন।

পরে ওই তরুণী দেশে পালিয়ে এসে হাতিরঝিল থানায় টিকটক হৃদয় বাবুসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গত ১জুন একটি মামলা করেন। তার কাছ থেকেই নিজের মেয়েও সেখানে রয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, টিকটক হৃদয় বাবু ছাড়াও সবুজ (৩০), সাগর (২৭), রুবেল ওরফে রাহুল (৩১) এবং আরও কয়েকজন চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে তার মেয়েকে বেঙ্গালুরুর আনন্দপুরা সার্কেলের একটি বাসায় পাচার করে।

সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি এক তরণী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হলে বেঙ্গালুরু পুলিশের অভিযানের সময় গুলিতে আহত কয়েকজনসহ টিকটক হৃদয় বাবু গ্রেপ্তার হয়।

ঘটনাটি আলোচনায় আসার পর বিভিন্ন তদন্তে দেখা যায়, টিকটক হৃদয়ের চক্রটি শুধু ওই তরুণী নয়, আরও অনেককে বিভিন্নভাবে ভারতে পাচার করেছে।

আরও পড়ুন-