টিকটক হৃদয়ের হয়ে ‘কাজ করত’ অনিকের গ্রুপ, গ্রেপ্তার ৫

ভারতে নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত ‘টিকটক হৃদয় বাবু’র গ্রুপের হয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর পাশাপাশি তাদের মাদক সরবরাহের কাজ করত মগবাজার এলাকার ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী’ হিরো অনিকের গ্রুপ বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2021, 12:24 PM
Updated : 5 July 2021, 12:31 PM

গত রোববার রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে অনিকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের বিশেষায়িত এই ইউনিটের কর্মকর্তারা।

গ্রেপ্তার অনিক হাসান ওরফে হিরো অনিক (২৫) শুধু সম্প্রতি আলোচনায় আসা মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত টিকটক হৃদয়ের সহযোগী নয়- মগবাজার, হাতিরঝিল ও তদসংলগ্ন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং মাদক সিন্ডিকেটের ‘অন্যতম হোতা’ বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণী নির্যাতনের ঘটনায় সম্প্রতি আলোচনায় আসে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’।

গত রোববার রাতে তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া অন্যরা হলেন, মো. শহিদুল ইসলাম (৩৪), আবির আহমেদ রাকিব (২২), মো. সোহাগ হোসেন আরিফ (৩৬) ও  হিরা (২২)।

তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, ৫টি ধারালো অস্ত্র, একটি চেইন, ৩০০ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

বেঙ্গালুরুতে সম্প্রতি বাংলাদেশের এক তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। শারীরিক নির্যাতনের সময় ২২ বছরের ওই তরুণীকে দল বেঁধে ধর্ষণও করা হয় বলে এনডিটিভি জানায়।

ওই ঘটনায় বেঙ্গালুরু পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে টিকটক হৃদয়সহ দুজন পালানোর সময় গুলিবিদ্ধ হয় বলে জানায় ভারতের পুলিশ।

সোমবার বিকালে কারওয়ান বাজার র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে কমান্ডার মঈন সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, অনিকের বিরুদ্ধে বর্তমানে হত্যা, মাদক ও অস্ত্র, ডাকাতিসহ ৯টি মামলা রয়েছে।

এই গ্রুপের ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কিশোর অবস্থায থেকেই অনিক অপরাধ চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে সে সংঘবদ্ধ দল গড়ে তোলে।

“অনিক ২০১৬ সালের আলোচিত 'আরিফ' হত্যা মামলার মাধ্যমে পরিচিতি পায়। তার এই সংঘবদ্ধ দল মগবাজার, মধুবাগ, মীরবাগ, নতুন রাস্তা পেয়ারাবাগ, চেয়ারম্যান গলি, আমবাগান ও হাতিরঝিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মাদক সিন্ডিকেট ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আসছিল।“

বিভিন্ন সময়ে সে ও তার দল হাতিরঝিলে আগত দর্শনার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করত উল্লেখ করে ঊর্ধ্বতন এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, “সে উক্ত এলাকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত।“

টিকটিক গ্রুপের সঙ্গে এই গ্রুপের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তিনি বলেন, “হাতিরঝিল এলাকা দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় সেখানকার টিকটক গ্রুপের কার্যকলাপ সে নিয়ন্ত্রণ করত। সে টিকটক হৃদয়ের অন্যতম সহযোগী ছিল। হৃদয়ের চাহিদা অনুযায়ী সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করত।

“এছাড়া টিকটক গ্রুপের নেশা ও আড্ডায় মাদক সরবরাহ করত।“

কমান্ডার মঈন বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত অন্য সদস্যদের কোনো পেশা নেই। অপরাধ থেকেই মূলত তাদের আয়ের উৎস।“

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার অন্যদের মধ্যে শহিদুল ইসলামের নামে মাদক ও চুরির ৬টি এবং রাকিবের নামে রয়েছে দুটি মামলা।

অন্যদিকে আরিফের নামে নারী ও শিশু অপহরণ, মাদক ও ডাকাতির তিনটি মামলা রয়েছে। আর হিরার নামে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর আঘাত ও চুরির একটি মামলা রয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মঈন ।

আরও পড়ুন-