ঘুষের মামলায় দুদক পরিচালকের জামিন আবেদন ফের খারিজ

পুলিশের সাবেক ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার মামলায় দুদকের সাবেক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন আবেদন আবারও খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2021, 05:20 PM
Updated : 24 June 2021, 05:20 PM

বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

এনামুল বাছিরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল ও জাহেদুল আলম। দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে আরও দুইবার দুদকের সাবেক পরিচালক এনামুলের জামিন আবেদন খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, “তার আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। মামলাটি বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। ১১ জনের সাক্ষ্য এরই মধ্যে হয়ে গেছে।”

পুলিশের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুদকের সাবেক পরিচালক এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে মামলা করে দুদক।

মামলায় বলা হয়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আশায় দুদক কর্মকর্তা এনামুল বাছিরকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেন ডিআইজি মিজান।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ১৩ জুনের মধ্যে রমনা পার্কে এই লেনদেনের ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে বলা হয়। এই মামলায় গত বছর ১৯ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন। একই বছর ১৮ মার্চ এ মামলায় এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।

গত ২৯ এপ্রিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এনামুল বাছিরের জামিন আবেদন খারিজ করে। পরে ১৬ জুন হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেন এনামুল বাছির।

এ মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে এরই মধ্যে ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ২৯ জুন ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।

এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মিজানকে।

এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক; এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।

সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান ২০২০ সালের ৮ জুন দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির।

এর সপক্ষে তাদের কথপোকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে দেন তিনি। ওই অডিও প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা।

অভিযোগটি অস্বীকার করে বাছির দাবি করেন, তার কণ্ঠ নকল করে ডিআইজি মিজান কিছু 'বানোয়াট' রেকর্ড একটি টেলিভিশনকে সরবরাহ করেছেন।

অন্যদিকে ডিআইজি মিজান বলেন, সব জেনেশুনেই তিনি কাজটি করেছেন ‘বাধ্য হয়ে’। ঘুষের অভিযোগ ওঠার পর তাদের দুজনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

২০১৯ সালের ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। আর দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার ডিআইজি মিজানকে পরে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।