নারী ও শিশু পাচারে জড়িতরা ছাড় পাবে না: বিজিবি মহাপরিচালক

নারী ও শিশু পাচারে জড়িত কেউ কোনোভাবে ছাড় পাবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2021, 10:07 AM
Updated : 24 June 2021, 10:07 AM

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর গুলশানে সীমান্ত ব্যাংকের ১৯তম শাখার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, “নারী-শিশু পাচার ও মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবির জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। এসব বিষয়ে কারো কোনো সুপারিশ বিজিবি পাত্তা দেয় না।"

সাফিনুল ইসলাম বলেন, “সাতক্ষীরায় নারী পাচারের অভিযোগে একজন নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলরের স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে ধরার জন্য আমরা প্রতিদিনই তার বাসায় অভিযান চালাই, কিন্তু তাকে বাসায় পাওয়া যায় না। এ বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছে।

“পুলিশ-বিজিবি একই মন্ত্রণালয়ের কাজ করে এবং পরস্পরের সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষাসহ সীমান্তেও আমরা কাজ করছি।”

মে মাসের শেষে ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে নারী পাচারের  নতুন নতুন তথ্য আসতে শুরু করে।

পুলিশ বলছে, পাচারকারীদের একটি চক্রকে তারা চিহ্নিত করেছে, যারা ইতোমধ্যে সহস্রাধিক নারীকে ভারতে পাচার করেছে।

নারী ও শিশু পাচার বন্ধে গণমাধ্যম ও জনগণের সহযোগিতা চেয়ে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, “নারী পাচার রোধে মিডিয়ার একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। কেউ যেন প্রলোভনে পড়ে পাচারের শিকার না হন, সেদিকে সমাজের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।"

মেজর জেনারেল সাফিনুল বলেন, গত এক মাসে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত, সাতক্ষীরা সীমান্ত ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত থেকে ৩০০ জনকে অবৈধ পারাপারের অপরাধে ধরা হয়েছে এবং তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন শেষে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

"এছাড়া মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে রোহিঙ্গারা আসছ। গতকাল রাতেও তিনজন রোহিঙ্গা নৌকায় করে এসেছিল। পরে তাদেরকে আবার রাতেই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।"

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সীমান্তে নজরদারির ব্যবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিরা এলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক। তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিজিবিও কাজ করছে।

“কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্ত ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার। আমাদের একটি বিওপি থেকে আরেকটি বিওপির দূরত্ব ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার। বিওপিতে টহল দল থাকে, তারপরও শতভাগ সম্ভব হয়ে ওঠে না।"

বিজিবিতে কতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন জানতে চাইলে সাফিনুল ইসলাম বলেন, “বিজিবিতে ৬৫ হাজারের বেশি সদস্য রয়েছেন। তারা প্রতিনিয়ত সীমান্তে কাজ করছেন। বিজিবি সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলেন। গতকাল বুধবার পর্যন্ত আক্রান্তের হার এক শতাংশে পৌঁছেছে। আগে আক্রান্তের হার ছিল দশমিক ৭০ শতাংশ।”

সীমান্ত ব্যাংকের শাখা উদ্বোধনের সময় বিজিবি প্রধান বলেন, “পর্যায়ক্রমে ব্যাংকিং সেবা সীমান্তে পৌঁছে দেয়া হবে। বিজিবির সদস্যরা সহজ শর্তে ঋণ পেয়ে থাকেন। সদস্যদের সন্তানদের পড়াশোনা শেষে ব্যাংকে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।"

সীমান্ত ব্যাংক ইতোমধ্যে ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, আরটিজিএস, বিএফটিএন এবং রেমিটেন্স সেবাসহ বিভিন্ন সেবা চালু করেছে বলে জানান তিনি।