ধৈর্য ধরে দেখুন: টিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

কোভিড-১৯ টিকার অপর্যাপ্ততা নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন, তাদের ধৈর্য ধরে সরকারের পদক্ষেপ দেখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2021, 03:09 PM
Updated : 23 June 2021, 03:11 PM

তিনি বলেছেন, “যারা সমালোচনা করছেন, তাদের বলব একটু ধৈর্য ধরেন। তারপর দেখেন আমরা কতটুকু কী করতে পারি। তারপর সমালোচনা করেন।”

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বুধবার আয়োজিত আলোচনা সভায় একথা বলেন দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা। মহামারীকালে গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই সভায় যুক্ত হন তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারীর বছর গড়ানোর পর অন্য অনেক দেশের আগে সরকার দেশে গণটিকাদান শুরু করে। কিন্তু টিকা সঙ্কটের কারণে তা ব্যাহিত হচ্ছে, যা নিয়ে সরকারের সমালোচনা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, অনেক দেশ যেখানে এখনও টিকা দেওয়া শুরু করতে পারেনি, সেখানে তার সরকার আগে পদক্ষেপ নিয়েছিল বলে তা শুরু করা গেছে পাঁচ মাস আগে।

“ভারতে যখন মহামারী ব্যাপকভাবে শুরু হল, তারা ভ্যাকসিন রপ্তানি করা বন্ধ করে দেওয়াতে আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা এখন আবার ভ্যাকসিন কিনতে শুরু করেছি।”

পর্যায়ক্রমে দেশের সবাইকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে সরকার এগোচ্ছে বলে জানান তিনি।

সমালোচকদের নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমার খুব দুঃখ লাগে, যাদেরকে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগেভাগে ভ্যাকসিন দিয়েছি, দুই ডোজ দেওয়ার পর তারা এখন সমালোচনা করে। অথচ তারাই কিন্তু সবার আগে নিয়েছে। তারাই আবার বড় বড় সমালোচনার কথা …. একে গালি ওকে গালি…. অনেক কিছু দেন, আমরা শুনি।

“তারা যখন (টিকা) নিয়েছিলেন, তখন তো এই কথা বলেননি। এখন আবার সমালোচনা কেন?”

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিনোফার্মের করোনাভাইরাসের টিকা নিচ্ছেন এক মেডিকেল শিক্ষার্থী। ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়েই যে টিকার সঙ্কট, তা সমালোচকদের বোঝার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “যে ভ্যাকসিন আমরা ৪ ডলারে কিনেছি, এখন তা ১৫ ডলারে কিনতে হচ্ছে। সামনে হয়ত আরও বেশি দাম হবে। আমরা তো আগেই টাকা দিয়ে, পয়সা দিয়ে সব চেষ্টা করে রেখেছিলাম।”

বাংলাদেশে যেন ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরি করা যায়, সেই ব্যবস্থাও সরকার করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমরা যেন নিজেরা ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারি, তার জন্য আমাদের ফার্মসিউটিক্যাল তৈরি করা দরকার। আমরা কীভাবে এখানে ভ্যাকসিন করব, তার উপর আমরা গবেষণা করে ইন্সটিটিউট তৈরি করে আমরাও যেন ভবিষ্যতে ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারি, তার জন্য যা যা দরকার, আমরা সেই ব্যবস্থা নেব।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় এখনও সবচেয়ে ভালো স্থানে রয়েছে বলে দাবি করেন সরকার প্রধান।

তিনি বলেন, “আমাদের উন্নয়ন কোনো ম্যাজিক না। এটা আমাদের পরিকল্পনা। এটা আমাদের একটা দর্শন, একটা আদর্শ।

“করোনাভাইরাস আমাদের যথেষ্ট কষ্ট দিচ্ছে সারা বিশ্বব্যাপী। এটা একটা বিরাট সমস্যা। তারপরও আমরা আমাদের অর্থনীতির গতিটা সব সময় ঠিক রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যদিও এতে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তারপরও হয়ত যে লক্ষ্যটা ছিল, সেটা হয়ত পূরণ করতে পারিনি, কিন্তু তারপরও আমি বলব, এই দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই এখন সব থেকে ভালো স্থানে আছে এবং থাকবে, সেটাই বড় কথা।”