সরকার ইতোমধ্যে স্থানন্তরের প্রক্রিয়া শুরু করলেও এ বিষয়ে আলোচনা করার ওপর জোর দিয়ে সিইসি কে এমন নূরুল হুদা বলেছেন, “আলোচনা করতে হবে। কীভাবে নেবে না নেবে অবশ্যই তা নিয়ে আলোচনা হবে। এটা তো টেবিল চেয়ার না যে উঠিয়ে নিয়ে গেলাম। এরপরে সরকার কী সিদ্ধান্ত… কী দেবে না দেবে এটা পরের কথা।”
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সব ‘জেনে-বুঝেই’ এনআইডি সেবাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়া হয়েছে।
এক যুগ আগে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার শুরু থেকেই এ কাজ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে চলছিল। ইসির আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি সেই দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের হাতে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও ইসির মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে।
উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের চিঠি পাঠিয়েছে, এটা নিয়ে যেতে চায়। এরপরও আমাদের সঙ্গে তাদের কথা বলতে হবে।… আলোচনার জায়গা থাকছে। এটা তো বড় প্রতিষ্ঠান, এটা বড় ধরনের কমপ্লিকেটেড বিষয়।”
সিইসির মতে, সরকারের রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বে এনআইডি কার্যক্রম যুক্ত করে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে প্রজ্ঞাপন জারির পরও আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
“ইসির যে দক্ষ লোকবল রয়েছে, তাদের দিয়ে সেবাটা দিতে পারি- এটা আমাদের যুক্তি। ইভেনচুয়ালি কী হবে না হবে তা তো এখন বলা যাবে না।”
এদিকে দুপুরে কারা অধিদপ্তরে কারাবন্দি পোষ্যদের ‘বঙ্গবন্ধু বৃত্তি’ প্রদান অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
জবাবে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে যেসব কথা হচ্ছে, তা একেবারেই অবান্তর। আমরা জেনে-বুঝে সবার মতামত নিয়ে এনআইডি সেবাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে দিয়েছি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে।”
এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে দেওয়ার বিষয়ে মে মাসের মাঝামাঝি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একটি চিঠি নির্বাচন কমিশনে পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
তাতে বলা হয়, সরকার জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম ‘আইনানুগভাবে’ নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অবস্থায় ইসি যেন নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে প্রতিপালন করে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সিইসি বলেন, “নিশ্চয় সচিব পর্যায়ে এ বিষয়ে কথাবার্তা হবে।… কেবিনেট থেকে আমরা চিঠি পেয়েছি। তাদেরকে আমরা উত্তর দিয়েছি। আমরা এই পর্যায়ে আছি।
“যদি এ বিষয়ে আমাদের কাছে মতামত, পরামর্শ বা তারা কি করতে চায় তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনের সচিবের সঙ্গে বসে, তখন আমাদের বক্তব্য তুলে ধরা হবে।”
নির্বাচন কমিশন ২০০৭-০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকার কাজ শুরু করে। বর্তমানে দেশের ১১ কোটি ১৭ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত রয়েছে।
ভোটার তালিকার সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার কাজটিও হয় ইসির মাধ্যমে। ২০১০ সালে ইসির অধীনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ একটি আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পায়।
আরও পড়ুন