সুনাম ছড়ানো আরও ছয় পণ্যের জিআই সনদ

উৎপাদনের গুণাগুণ ও সুনাম ছড়িয়ে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে জিআই নিবন্ধন সনদ পেল আরও ছয়টি পণ্য।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2021, 04:18 PM
Updated : 20 Oct 2021, 04:31 AM

নতুন স্বীকৃতি পাওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে- ঢাকাই মসলিন, রংপুরের শতরঞ্জি, রাজশাহী সিল্ক, দিনাজপুরের কাটারিভোগ, নেত্রকোণার বিজয়পুরের সাদামাটি ও বাংলাদেশের কালিজিরা চাল।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) পক্ষ থেকে এই পণ্যগুলোকে জিআই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে ডিপিডিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এই ছয় পণ্যের জিআই সনদ সংশ্লিষ্টদের হাতে তুলে দেন।

ঢাকাই মসলিনের জিআই সনদ হস্তান্তর করা হয় বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলমের কাছে। রংপুরের শতরঞ্জি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসানের (এনডিসি) হাতে।

রাজশাহী সিল্কের জিআই সনদ নিয়েছেন বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মু. আবদুল হাকিম। বিজয়পুরের সাদামাটির সনদ দেওয়া হয় নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমানের হাতে।

দিনাজপুরের কাটারিভোগ ও বাংলাদেশের কালিজিরা চালের স্বীকৃতির সনদ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউশনের (বিআরআরআই) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের হাতে।

ভৌগলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন- জিআই) হচ্ছে- একটি প্রতীক বা চিহ্ন, যা পণ্য ও সেবার উৎস, গুণাগুণ ও সুনাম ধারণ ও প্রচার করে।

২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক সামগ্রী হিসেবে স্বীকৃতি পায় জামদানি। পরের বছর ইলিশ এবং ২০১৯ সালে ক্ষীরষাপাতি আমকে জিআই স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে তিনটি পণ্য এ তালিকায় ছিল।

‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মেধাসম্পদ’ শীর্ষক সেমিনার এবং ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নতুন ছয়টি পণ্যকে সনদ দেওয়ায় মোট জিআই পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল ৯টি।

অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেধাসম্পদ ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাংলাদেশের ডিজাইন করেছেন, দিয়েছেন পেটেন্ট।

“বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বড় ডিজাইনার আর কেউ নাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, ডিজাইন ও নির্দেশনা দিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল।"

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, “বঙ্গবন্ধু অনেক আগেই উপলব্ধি করেছিলেন দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য মেধাসম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে।

“মেধাসম্পদকে সংরক্ষণ ও কাজে লাগাতে হলে এর গুরুত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে, গবেষণা বাড়াতে হবে, ট্রেনিং বাড়াতে হবে এবং সবাইকে সচেতন হতে হবে।”

অনুষ্ঠানে পেটেন্ট, ডিজাইন, ট্রেডমার্কস সনদও দেওয়া হয়। পেটেন্ট সনদ পান বিজয় ডিজিটালের স্বত্বাধিকারী এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও হিসাব লিমিটেড।

ডিজাইন এর জন্য সনদ দেওয়া হয় বিডি ফুড লিমিটেড, জিহান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজকে।

ট্রেডমার্কস এর জন্য মোহনা টেলিভিশন লিমিটেড, একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, গোল্ডেন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল বিডি, প্রাণ আরএফএল গ্রুপ লিমিডেট এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড-কে সনদ দেওয়া হয়।

শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ডিপিডিটি’র ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. ওবায়দুর রহমান। মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব লুৎফুন নাহার বেগম এবং মো. সানোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিপিডিটি’র রেজিস্ট্রার মো. আবদুস সাত্তার।