পরীমনি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ জানানোর পর সোমবার থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় বোট ক্লাবের নির্বাহী সদস্য ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
পরীমনি অভিযোগ করেন, গত ৮ জুন উত্তরার পাশের বিরুলিয়ার ঢাকা বোট ক্লাবে তার উপর চড়াও হন নাসির। তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানোর পাশাপাশি মারধরও করা হয়।
এরপর থেকে আলোচনায় তুরাগ নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা ঢাকা বোট ক্লাব, যার সভাপতি পদে রয়েছেন পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ।
পরীমনির অভিযোগের ঘটনাস্থল বোটক্লাবে সোমবার দুপুরে সাংবাদিকরা যাওয়ার পর ক্লাবের ফটকে দাঁড়িয়ে কথা বলেন ঢাকা বোট ক্লাবের নির্বাহী সদস্য বখতিয়ার আহমেদ খান।
এই ঘটনায় ক্লাব ‘মর্মাহত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে নিশ্চিতভাবেই ক্লাবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, মূলত গণমাধ্যমে পরীমনির অভিযোগটি প্রচার পাওয়ার পরই তারা ঘটনার বিশদ জানতে পারেন।
“সেদিন একটা ঘটনা ঘটেছিল বলে শুনেছিলাম, কিন্তু কেউ অভিযোগ না দেওয়ায় বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি।”
সেদিন আসলে কী ঘটেছিল- জানতে চাইলে বখতিয়ার বলেন, ঘটনাটি নিয়ে ক্লাব তদন্ত করবে, এরপর সত্যটা জানা যাবে। ধারণা থেকে তিনি কিছু বলতে চান না।
ক্লাব অতিথিদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে কি না- প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “মূলত যিনি বারে অতিথিদের নিয়ে গিয়েছেন, নিরাপত্তার দায়িত্ব তারই ছিল। বারের ভেতর নিরাপত্তাকর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। সুতরাং সেখানে কী হয়েছে, সেটা তাদের জানার কথা নয়।”
বারের লাইসেন্স আছে কি না- জানতে চাইলে বখতিয়ার বলেন, “সীমিত পর্যায়ে বারের অনুমোদন রয়েছে। সেখানে শুধু পারমিটধারী সদস্যরা সেবা নিতে পারেন।”
নাসির মাহমুদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ক্লাবের সংবিধান (গঠনতন্ত্র) অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে গ্রেপ্তারের আগে নাসির গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সেদিনের ঘটনায় প্রতিবেদন ক্লাবকে দেওয়া হয়েছিল।
“পরের দিনই আমাদের ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী রিপোর্ট করা হয়েছে। আমাদের স্টাফরা লিখিতভাবে সমস্ত রিপোর্ট দিয়েছে।”
তিনি বলেন, সেদিন পরীমনি জোর করে দামি মদ নিতে গেলে বাধা দিয়েছিলেন তিনি, তাতে এই অভিনেত্রী উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন।
“তারা তো নিতে পারে না, তারা তো মেম্বার না। আমি জাস্ট তাদের বাধা দিয়েছি, এটা নেওয়া যাবে না। এটা বিক্রিযোগ্য না। এরপরই সে (পরীমনি) উত্তেজিত হয়ে যায়। তারপর সে আমাকে গালাগালি শুরু করে। আমার স্টাফরা তাকে থামানোর চেষ্টা করে।”
পরীমনির সঙ্গীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলেও পাল্টা অভিযোগ করেন নাসির।
“তার সঙ্গে যে ছেলেগুলো ছিল, সে আমাকে চড় থাপ্পড় দেয়, ও (পরীমনি) গ্লাস মারলে আমার ঘাড়ে লাগে। এই অবস্থায় আমার সিকিউরিটিদের আমি নির্দেশ দিই, সিকিউরিটিরা তাকে নিয়ে যায়।”
ওই সময় পরীমনি মাতাল ছিলেন বলে দাবি করেন নাসির।