‘সাইবার জিহাদ’ রুখতে দক্ষ কর্মীবাহিনী লাগবে: মোস্তাফা জব্বার

মৌলবাদীদের ‘সাইবার জিহাদ’ রুখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দক্ষ রাজনৈতিক কর্মী বাহিনী গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

নিজস্ব প্রদিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 June 2021, 04:22 PM
Updated : 10 June 2021, 04:22 PM

বৃহস্পতিবার ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির’ এক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্মিলিতভাবে এমন উদ্যোগ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এখনও আমরা ডিজিটাল হতে পারিনি। এজন্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলো মনিটরিংয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দক্ষ রাজনৈতিক কর্মীবাহিনী গড়ে তুলতে হবে।

“অনলাইনের এই রাজনৈতিক যুদ্ধ সম্মিলিতভাবে আমরা না করতে পারলে একসময় বাংলাদেশ মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তির কাছে চলে যাবে।”

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জঙ্গীদের জেহাদের বিরুদ্ধে তরুণ সমাজ: সরকারের করণীয়’ শীর্ষক ওই ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

ওয়েবিনারে মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, “ফেইসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য বিষয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে স্পষ্টভাবে নির্দেশনা দেওয়া আছে। আগের চেয়ে ২০২১ সালে এসব মাধ্যমের সাথে আমাদের যোগাযোগ অনেক বেড়েছে।

“কিন্তু সিঙ্গাপুরের মতো নিজেদের আইন অনুযায়ী এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালানোর পর্যায়ে এখনও পৌঁছতে পারি নি। এক্ষেত্রে আমরাও সিঙ্গাপুরের মতো কঠোর আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছি।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘সাইবার জিহাদের’ কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, “বর্তমান এই যুদ্ধ রাজনৈতিক যুদ্ধ। রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা না করে শুধু রিপোর্ট করে এই সাইবার জিহাদ প্রতিহত করা সম্ভব নয়। আমরা তাদের প্রতিহত করার মত সুসংগঠিত নই।”

শাহরিয়ার কবির বলেন, “সরকার মাঠ পর্যায়ে জঙ্গি দমনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য প্রদর্শন করলেও জঙ্গিদের সাইবার জেহাদ মোকাবেলায় তেমন কোনও অগ্রগতি দৃশ্যমান নয়।

ইউটিউব ও ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জঙ্গি মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস কার্যকরভাবে মোকাবেলা করা একা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এ কাজে সরকারের উচিৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ তরুণ সমাজের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা।”

লেখক ও অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, “সাইবার জগতের মাধ্যমেই বর্তমানে দেশবিরোধী, জঙ্গিবাদী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আমাকে যে ছেলেটি আক্রমণ করেছিল, তার সাথে আমি পরবর্তীতে দেখা করেছিলাম।

“সে আমাকে বলেছিল যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেই আমার ওপর আক্রমণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। তাই জঙ্গি মৌলবাদীদের সাইবার জিহাদ প্রতিরোধে সরকারকে অনুরোধ করি- আপনারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অসাম্প্রদায়িক তরুণ প্রজন্মে সাইবার যোদ্ধাদের ডাকুন। যারা সাইবার জগতে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের সুনির্দিষ্ট মতামতের ভিত্তিতে সাইবার জিহাদ মোকাবেলায় কাজ করুন।”

ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন, ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি কানিজ আকলিমা সুলতানা, নির্মূল কমিটির বহুভাষিক সাময়িকী ‘জাগরণের’ যুগ্ম সম্পাদক সুইডেন প্রবাসী সাংবাদিক সাব্বির খান, সুইজারল্যান্ড প্রবাসী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট অমি রহমান পিয়াল, নির্মূল কমিটির আইটি সেলের সভাপতি আসিফ মুনীর তন্ময়, নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা তুরিন আফরোজ, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট লীনা পারভীন, নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানবাধিকার নেতা কাজী মুকুল।

ওয়েবিনারে ধারণাপত্র পাঠ করেন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মারুফ রসুল।