বৃহস্পতিবার কমিশনের সভায় দুই মামলার অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয় বলে দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপরে সচিব সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এক মামলার তদন্তে আসামি এনামুল হক এনুর বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসাসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
“এছাড়া এনুর দুই সহযোগী হারুনুর রশীদ ও আবুল কালাম আজাদ প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনে এনুকে সহযোগিতা করেছে বলে তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।”
অপর মামলার তদন্তে রূপন ভূঁইয়ার নামে স্থাবর ও অস্থাবর মিলে ৪২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে জানিয়ে দুদক সচিব বলেন, এসব সম্পদের মধ্যে পাঁচ কোটি ৩৬ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৩ টাকার সম্পদ অর্জনের বৈধ উৎস্য পাওয়া গেলেও বাকি ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ১৬ হাজার ৯৮৭ টাকার সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
আসামি রূপন ভূইয়া এসব ‘অবৈধ সম্পদ’ ক্যাসিনো ব্যবসা এবং বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এনামুল হক এনু ও তার ভাই রূপন ভূঁইয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুদক।
এনু ও তার দুই সহযোগী হারুনুর রশীদ ও আবুল কালাম আজাদকে আসামি করে মামলাটি করেছিলেন কমিশনের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী। পরে তিনি নিজেই এ মামলার তদন্ত করেন।
মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, পরস্পর যোগসাজশে অবৈধ উপায়ে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেন।
অপরদিকে রূপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী। পরে বাদী নিজেই এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান।
রূপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ করেছেন।
২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতা দুই ভাই, তাদের এক কর্মচারী এবং তাদের এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা, আট কেজি সোনা এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়, যেগুলো জুয়ার টাকায় তৈরি সম্পদ বলে ওই সময় র্যাব জানিয়েছিল।
এনু ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। এছাড়া এনু গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও তার ভাই রূপন ভূঁইয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর দল থেকে তাদের বহিস্কার করা হয়।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। অভিযানে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বেশ কয়েকজন নেতার ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
এর পর ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নামে দুদক। ওই সময় ক্যাসিনো ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০টির বেশি মামলা করেছিল সংস্থাটি।