দীর্ঘ বিরতিতে ভিত গেছে নড়ে, ভাবনায় প্রাথমিকের অভিভাবকরা

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে দীর্ঘ ১৫ মাস বিরতির পর সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা করলেও শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিকভাবে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন প্রাথমিকের অভিভাবকরা।

কাজী নাফিয়া রহমান নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2021, 02:43 AM
Updated : 2 June 2021, 02:43 AM

তারা বলছেন, দীর্ঘসময় স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশুনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে শিশুরা। অনলাইন ক্লাসের পড়াও ঠিকমতো বুঝতে পারছে না। আর অনলাইন ক্লাসের বাইরে থাকা অনেক শিশুর শ্রেণিকক্ষে ফিরে আসা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

তাছাড়া ঘরবন্দি জীবন আর অনলাইন ক্লাসের কারণে যন্ত্রের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে শিশুদের একটি অংশ। স্কুল বন্ধ থাকায় শহুরে শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন থেকেও।

শিক্ষায় ঘাটতির পাশাপাশি যে বৈষম্য তৈরি হয়েছে, তাতে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবিষ্যতের দিকে এগোবে; এমন উদ্বেগ বিশেষজ্ঞদের। বিপর্যয় ঠেকাতে শিক্ষায় সরকারের বাড়তি মনোযোগ ও বড় বিনিয়োগ চান তারা।

শিশুদের বদলে যাওয়া ভুবন

মহামারীর ধাক্কায় গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের নয়ানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সজীবকে কাজে নামতে হয়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা না থাকায় সবজি বিক্রিসহ পরিবারের নানা কাজে সহযোগিতা করতে হচ্ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে এই শিক্ষার্থী আবার শ্রেণিকক্ষে ফিরবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তার ভাই মো. শিপন।

“স্কুল খুলে দিলেও আবার সেখানে মানিয়ে নিতে সময় লাগবে। হয়ত স্কুলে যেতেও চাইবে না, ঝরে পড়তে পারে। কারণ এখন সেই অভ্যাসটাই নষ্ট হয়ে গেছে।”

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ক্লাস হলেও গাইবান্ধার এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা সেই সুযোগ পায়নি।

সজীবের মতো শিশুদের পড়াশোনায় আগ্রহ হারানোর পেছনে এটিও বড় কারণ জানিয়ে শিপন বলেন, “ও তো ক্লাস ফোরে তেমন কিছুই শেখে নাই, তাহলে ফাইভের পড়া পড়বে কী করে?

“ঘুরে বেড়ায়, আড্ডা দেয়। এক বছরে দুই দিনও মনে হয় পড়তে বসে নাই। আব্বু-আম্মু পড়তে বললে ও বলে কিছু বোঝে না। নতুন ক্লাসে যেহেতু সবই নতুন, ক্লাস না হলে বুঝবে কিভাবে?”

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মনে করেন, এই দীর্ঘ বিরতিতে বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবনের শুরুতেই হোঁচট খাবে।

“এখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যে সহায়তা দরকার, সেটা আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমে একেবারেই নেই। এই বিশাল ক্ষতিটা চিন্তার বিষয়। যদি সংখ্যায় বিবেচনা করি, তাহলে সেটা দুই-তিন কোটি হতে পারে।”

মহামারীর সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় অস্বচ্ছল অনেক পরিবারের শিশুকে বাধ্য হয়ে নামতে হয়েছে অর্থ উপার্জনে।

এতে ‘বিরাট বৈষম্য সৃষ্টি হবে’ জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, “ধনী ছেলেমেয়েরা পড়াশোনায় এগিয়ে যাবে, দরিদ্ররা পিছিয়ে পড়বে। যে বাচ্চারা কিছু করতে পারবে না, তারা বৈষম্যের শিকার হয়ে ঝরে পড়বে।

“পড়াশুনা যখন হবে না, তখন অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিবে; তাদের পুরো জীবন নষ্ট হয়ে যাবে। এখান থেকে মাদক, সন্ত্রাস বেড়ে যাবে। চার-পাঁচ বছর পর কিশোর অপরাধ অনেকগুণ বেড়ে যাবে।”

শহরের স্বচ্ছল, শিক্ষিত পরিবার এবং মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তরা ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে পারলেও বর্তমান পরিস্থিতির প্রভাব ‘খুব ক্ষতিকর হবে’, আশঙ্কা সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের।

“সমস্যা হবে যারা অসহায়-মধ্যবিত্ত যেমন- মা স্ট্রাগল করছেন, পরিবারের কর্তা নাই। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে গ্রামের ছেলেমেয়েরা। যেসব পরিবারে শিক্ষার অভাব আছে, তাদের বাচ্চারা তো পড়াশুনা ভুলে যাবে। শিক্ষাব্যবস্থায় যে সংস্কারগুলো আমরা করতে চাচ্ছি, সংস্কার হলে এ শিশুরা এর বাইরে থেকে যাবে। কারণ আবার যখন টিউশন ফিরে আসবে, গাইড বই ফিরে আসবে, এদের দিকে কেউ তাকাবে না।”

সমস্যা অন্তহীন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সরকার কয়েকদফা সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনা করলেও, মহামারী পরিস্থিতিতে বারবার ছুটি বাড়াতে হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী আগামী ১৩ জুন থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা জানালেও তা নিয়ে সংশয় কাটছে না।

শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কমাতে সরকার অনলাইন ও টেলিভিশনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। এরই মধ্যে ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের পরের শ্রেণিতেও তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এই বিকল্প পাঠে শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে শুরু থেকেই।

অনলাইন ক্লাসেও অমনোযোগী হয়ে উঠছে শিশুরা।

জিগাতলার কুইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়ান আজফারের মা নাদিরা সুলতানা জানান, নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস হলেও তার ছেলেকে নতুন ক্লাসের পড়া বোঝাতে অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

“সে কারণে পড়াশুনার আগ্রহ কমে গেছে। পড়তে বসতে চায় না। অনলাইন ক্লাসে বেশিক্ষণ মনোযোগও ধরে রাখতে পারে না। অনেকদিন ধরে বাচ্চারা বাসায় বন্দি একটা রুটিন পার করছে। এভাবে চলাটা ওদের জন্যও কষ্টের।”

ঢাকার বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহিবিন হককে এখন জোর করে পড়তে বসাতে হয়।

তার বাবা জহুরুল হক বলেন, “বাচ্চা আগে যা পড়েছে, এখন সেগুলো ভুলে যাচ্ছে।”

স্কুলের খেলাধুলা আর বন্ধুদের না পাওয়ায় বাচ্চারা একঘেঁয়েমিতে ভুগছে জানিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খুলে দেয়ার দাবি তার।

অনলাইনে সপ্তাহে পাঁচদিন ৪৫ মিনিট করে চারটি ক্লাস হয় মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসাইবা মাহবুবের।

অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা হলেও ‘পড়াশুনায় আগের গতি নেই’ জানিয়ে তার মা মনিরা সিদ্দীকা বলেন, “অনলাইনের ক্লাস সরাসরি ক্লাসের মত তো না। খুব বেশি চাপ দেই না পড়াশুনা নিয়ে, কারণ অনেকদিন ধরে ঘরে বন্দি। ওদের মানসিক অবস্থাটাও তো বুঝতে হবে।”

স্কুলের ক্লাস আর হোম ওয়ার্ক না থাকায় তেজকুনিপাড়ার বটোমলি হোম গার্লস হাই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মাইশা মালিহা পড়াশুনার আগ্রহই হারিয়ে ফেলছে।

এই শিশুর মা নাদিরা বেগম বলেন, “অনেক কিছু ভুলে গেছে। ইংরেজি আর অংকে অনেক আগ্রহ ছিল মেয়েটার। কিন্তু এগুলোতেও অনেকটা পিছিয়ে গেছে।

“বাচ্চাদের ভবিষ্যতটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যতটুকু শেখার তার চেয়ে বেশি পিছিয়ে গেল। স্কুল খুলে সপ্তাহে দুই-তিনদিন ক্লাস হলেও ওদের পড়াশুনার অভ্যাসটা ফিরে আসবে। প্রতিদিন জিজ্ঞেস করে কবে স্কুল খুলবে, কবে স্কুলে যাবে।”

তিনি বলেন, “অনলাইনের ক্লাস শেষ হতে না হতেই মোবাইল টেপা শুরু করে। অনলাইনে ক্লাস করতে বিরক্ত হয়ে যায়। জোর করে বসিয়ে রাখতে হয়। বাসায় টিচারের কাছে পড়ছে, কিন্তু সেটা স্কুলের মত হচ্ছে না। টিচারদের কাছে পড়া শেষ হলেই আর পড়তে বসে না।”

যেসব শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করতে পারছে না, তাদের সমস্যা আরও বেশি।

স্কুল বন্ধ থাকলেও প্রতি মাসে ৯০০ টাকা বেতন গুনতে কষ্ট হচ্ছিল করোনাভাইরাসে আর্থিক সংকটে পড়া গৃহকর্মী আয়েশা বেগমের। তাই চলতি বছর ছেলে সাকিবুল হাসান আবিরকে কিন্ডারগার্টেন থেকে এনে মিরপুরের শহীদবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছেন তিনি।

স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক শিশুরই নেই পড়ায় মন।

তাতে পড়াশুনার ক্ষতি বেড়েছে জানিয়ে আয়েশা বেগম বলেন, “এই স্কুলে অনলাইনে ক্লাস নেয় না। কোনো খোঁজ-খবরও নেয় না। একটা প্রাইভেটে পড়তে দিছি। ওইখানে যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ একটু পড়ে, ঘরে পড়তে বসে না একদম। অভ্যাস খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”

ঢাকা আইডিয়াল প্রিপারেটরি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরভির মা সুরমা আক্তার জানান, ডিভাইস না থাকায় তার মেয়ে অনলাইনে ক্লাস করতে পারছে না।

“কোচিংয়ে এক টিচারের কাছে পড়ে। মেয়ের পড়াশুনার আগ্রহ অনেক। নিজে নিজে চেষ্টা করে। কিন্তু স্কুল খোলা থাকলে যেভাবে পড়াশুনা হত, সেটা তো হচ্ছে না।”

মালিবাগ ফয়জুর রহমান আইডিয়াল স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাকিয়া করিম রাকার বাবা আব্দুল করিম স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, “পড়াশুনা অর্ধেকও হচ্ছে না। এই দেড় বছরের ধাক্কা অনেক বড়। সারাজীবন দুর্বলতা থেকে যাবে।”

শহর এলাকার বাইরের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই অনলাইন ক্লাসের বাইরে রয়েছে।

হবিগঞ্জের মাধবপুরের নোয়াপাড়ার আই বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহামারীর পুরো সময়জুড়ে অনলাইনে কোনো ক্লাস হয়নি।

এই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারজানা আক্তারের ভাই শামীম খান বলেন, “ওর পড়াশুনার মনোযোগ দিন দিন কমে যাচ্ছে। খেলাধুলা, টিভি, মোবাইলে আসক্তি বেড়ে যাচ্ছে খুব। খুব চিন্তায় আছি ওকে নিয়ে। আমরা চাই দ্রুত যেন ওরা স্কুলে ফিরতে পারে। এই অবস্থা চললে তো অনেক বাচ্চা আর স্কুলে ফিরবেই না।”

কী করতে হবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দা তাহমিনা আখতার মনে করেন, শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, “সংক্ষিপ্ত সিলেবাসও দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে সবকিছু শিক্ষার্থীরা শিখে নেবে তা কিন্তু না। কতদিন মহামারী চলবে, সেটার ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করবে।

“প্রধান ক্ষতিটা হল অনেক শিশু ঝরে পড়েছে। তাদেরকে ফিরিয়ে আনা বড় কাজ। ব্যুরো অব নন-ফরমাল এডুকেশনের সেকেন্ড চান্স এডুকেশনের দিকে এসব ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের যদি নিয়ে আসা যায়, তাহলে ক্ষতি কিছুটা পূরণ হবে।”

শিশুরা যে মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেটি স্মরণ করিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, “তাদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। কাউন্সিলিং বা চিকিৎসা দেওয়া গেলে ভালো হয়। স্কুলকেই সেই দায়িত্ব নিতে হবে। বহির্বিশ্বে কিন্তু প্রতিটি স্কুলে চিকিৎসক আছে। আমাদের দেশে তো সেগুলো নেই। সব ক্ষতি তো আমরা পূরণ করতে পারব না।”

অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, “যারা শিক্ষিত, বাচ্চাদের সম্পর্কে সচেতন তাদের শিশুদের তুলনামূলক কম ক্ষতি হবে। কিন্তু যারা এ পর্যায়ে নেই তাদের সন্তানদের ক্ষতি হবে। সেক্ষেত্রে স্কুল-কলেজ খোলার পর শিক্ষকদের এ ক্ষতিগুলো পূরণে সেভাবেই ক্লাস নিতে হবে।”

স্কুল খুললে শিশুদের এমন স্বতস্ফূর্ততা মিলবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগে অভিভাবকরা।

শিশুদের সমস্যা অনুযায়ী ডেটাবেইজ তৈরি করে পরিকল্পনা নিলে এক বছরের মধ্যে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “এজন্য মেগা প্রকল্প নিতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রের এই বড় বিপর্যয়কে  রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় স্বদিচ্ছা হিসেবে গ্রহণ করে, এখানে প্রচুর বিনিয়োগ ঘটিয়ে কাজ করতে হবে। জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে দেখে এটিকে এক নম্বরে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজে নামতে হবে। বিনিয়োগে কোনো অজুহাত বা স্বল্পতা এখানে যেন না থাকে।

“এই বাচ্চাদের সহায়তায় বিভিন্ন স্কুলে ছুটির দিনে ক্লাস নিতে হবে। এনজিও বা উঁচু ক্লাসের শিক্ষার্থীদের জড়িত করে তাদের বেতন দিয়ে তিন-ছয় মাসের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। এখানেই সরকারের বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। বিনিয়োগটা হবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে, যেন কোনো মধ্যস্বত্বভোগী ঢুকতে না পারে।”

ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতেও সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে জানিয়ে অধ্যাপক মনজুরুল বলেন, “অনলাইন শিক্ষাটা চলবে বেশ কিছুদিন। সেজন্য ডেটাবেইজ তৈরি করে যাদের ল্যাপটপ-ইন্টারনেট নেই, তাদের বিনামূল্যে সেগুলো দিতে হবে। সাথে একটু প্রশিক্ষণ দিলে তারা আনন্দের সাথে পড়াশুনা করবে।”

সেজন্য শিক্ষায় ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট বাড়াতেও সরকারকে বিনিয়োগ করতে বলেছেন এই শিক্ষাবিদ।

“সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নামলে স্কুল খুলে দিতে হবে। প্রতিদিন স্কুলে আনার দরকার নেই, দুই-তিনদিন করে সপ্তাহে ক্লাস করাতে হবে। শিক্ষকদের প্রণোদনা দিতে হবে।”

শিশুদের ধাপে ধাপে শ্রেণিকক্ষে নিয়ে আসার কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনও।

সরকারের পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি বলেছেন, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ছয়দিন আর বাকিরা একদিন ক্লাস করবে।