বাবুনগরী-মামুনুলদের দুর্নীতির খোঁজে দুদক

কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির নেতা জুনাইদ বাবুনগরী ও মামুনুল হকসহ অর্ধশত নেতার বিরুদ্ধে সংগঠনের তহবিল আত্মসাৎ ও দুর্নীতির ‘সুনির্দিষ্টি’ অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2021, 12:06 PM
Updated : 20 May 2021, 12:06 PM

এ জন্য পরিচালক মো. আকতার হোসেন আজাদকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “হেফাজতের বিষয়ে আমরা ছয় সদস্যের একটা কমিটি করে দিয়েছি। তারা আলোচনা করছে, দেখছে। আমাদের কাছে অভিযোগ আছে স্পেসিফিক।”

ছয় সদস্যের অনুসন্ধান দলের অন্যরা হলেন- কমিশনের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ নুরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও মো. সাইদুজ্জামান এবং উপ-সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান।

অনুসন্ধান পর্যায়ে হেফাজত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নে দুদক কমিশনার জহুরুল হক বলেন, “তদন্তের প্রয়োজনে যাকে যখন দরকার তদন্ত কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। আইনে ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার কথা বলে আছে, এই আইনে যা আছে সেভাবে তদন্ত কাজ শেষ করা হবে।”

তবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে লকডানের চলায় তদন্তে কোনো প্রতিবন্ধকতা হলে কমিশন সেই ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

দুদকের অনুসন্ধান দলের এক সদস্য জানান, গত এপ্রিলে হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, মহাসচিব নূর হুসাইন কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ কেন্দ্রীয় ও সংগঠনের বিভিন্ন জেলার ৫৪ নেতার ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য যাচাই করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সেখানে তাদের হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। যার একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন ইতোমধ্যে দুদকে পাঠানো হয়েছে। সেটি আমলে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

ইতোমধ্যে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সংগঠনটির ৩১৩ জন দাতার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এছাড়া সংগঠনটির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের ব্যাংক হিসাবেও ছয় কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য মিলেছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গত মার্চের শেষ দিকে মোদীর সফরের বিরোধিতায় নেমে নতুন করে আলোচনায় আসে হেফাজত। সংগঠনটির বিক্ষোভ ও হরতালে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামে সহিংসতায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়।

এরপর অর্ধশত মামলার পর মামুনুলসহ হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলার বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয়।