ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লা এর ভার্চুয়াল আদালতে এই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন রোজিনা ইসলামের আইনজীবীদের একজন আশরাফ উল আলম।
তিনি বলেন, “বিচারকের এজলাসে বসে ‘জুম প্ল্যাটফর্মে’ এই শুনানিতে আমরা অংশ নেব বলে ঠিক করেছি।“
শুনানির সময় কারাগার থেকে রোজিনাকে হাজির করা হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তবে চাইলে আমরা হাজতি পরোয়নার (প্রডাকশন ওয়ারেন্ট মূলে) তাকে কারাগার থেকে এজলাসে আনাতে পারতাম। কিন্তু আমরা সে আবেদন করিনি। তার উপস্থিতি দরকার নেই। আশা করি কাল জামিন হয়ে যাবে।“
এর আগে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের পরদিন মঙ্গলবার পুলিশ রিমান্ড চাইলেও তা নামঞ্জুর করে আদালত।
ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম জামিনের শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য্য করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বর্তমানে তিনি গাজীপুরে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’অভিযোগে সোমবার রোজিনাকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তার কক্ষে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
পরে রাতে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে ব্রিটিশ আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডিবিধির কয়েকটি ধারায় মামলা করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
রোজিনা ইসলাম ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর তার সহকর্মীরা বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘অনিয়ম-দুর্নীতি’ নিয়ে প্রতিবেদন করায় তাকে ‘হয়রানি’ করা হচ্ছে।
সচিবালয়ে আটকে রাখার সময় রোজিনাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয় বলেও অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
বুধবার রোজিনার আইনজীবী আরো বলেন, “সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি নিয়ে ইতোপূর্বে যে প্রতিবেদন করেছে তা জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট। তিনি একজন পেশাদার নারী সাংবাদিক। তার বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা করা হয়েছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত।
“রোজিনা ইসলামের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। তাছাড়া তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। সার্বিক বিবেচনা করে আমরা আশা করছি, বৃহস্পতিবার রোজিনা ইসলাম জামিন পাবেন।“
এর আগে মঙ্গলবার রিমান্ড নামঞ্জুর করে জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।
ওই দিন শাহবাগ থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন।
আগের দিনের মত বৃহষ্পতিবার আসামিপক্ষে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী, আশরাফ উল আলম, প্রশান্ত কুমার কমর্কারসহ বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সাভির্সেস ট্রাস্ট এবং আইন ও শালিস কেন্দ্রের আইনজীবী শুনানিতে থাকবেন।
রাষ্ট্রপক্ষে থাকার কথা রয়েছে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান কৌশুলি আব্দুল্লাহ আবু, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সাজ্জাদুল হক শিহাব ও তাপস পালের।
রোজিনার গ্রেপ্তারে বুধবারও দেশব্যাপী সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে তার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছেন।
এর মধ্যে বুধবার রোজিনার মামলার তদন্তভার পেয়েছে জন্য গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৫ জুলাই দিন ধার্য করেছে আদালত।
আরও পড়ুন-