রোজিনার পক্ষে সাংবাদিকতার শিক্ষকদের বিবৃতি

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা এবং মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার শিক্ষকদের সংগঠন ‘মিডিয়া এডুকেটরস’ নেটওয়ার্ক'।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2021, 06:53 PM
Updated : 19 May 2021, 08:14 AM

মঙ্গলবার ৪২ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে রোজিনা বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়।

সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তার কক্ষে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনাকে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।

রাতে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট এবং দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। সেই মামলায় মঙ্গলবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সাংবাদিকতার শিক্ষকদের বিবৃতিতে বলা হয়, এই ঘটনায় তারা ক্ষুব্ধ, হতবাক, ব্যথিত ও মর্মাহত।

রোজিনাকে হেনস্তা সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা শিক্ষক সমাজ মনে করি, এ ধরনের আচরণ শুধু সাংবাদিকতার ওপরই তীব্র আঘাত নয়, বরং তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই ঘটনা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও সুশাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।”

রোজিনার সহকর্মীরা দাবি করেছেন, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় আক্রোশের শিকার হয়েছেন তিনি।

শিক্ষকদের বিবৃতিতে বলা হয়, “সম্প্রতি তিনি স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর দুর্নীতি নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন করেছেন।

“আমরা মনে করি, দুর্নীতি একটি রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। বিশেষ করে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিকে কাটিয়ে ওঠার জন্য সরকার যে কৌশল ও পদক্ষেপের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে, কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর দুর্নীতি সেই অগ্রযাত্রাকে তীব্রভাবে ব্যাহত করছে।”

বিবৃতিদাতা শিক্ষকরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষক এবং সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিনা খাতুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল, রাকিব আহমেদ, শেখ আদনান ফাহাদ,সালমা আহমেদ, সুমাইয়া শিফাত,

মীর মো. ফজলে রাব্বি, নিশাত পারভেজ, মৃধা মো. শিবলী নোমান, সালমা সাবিহা, মো. সাঈদ আল-জামান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শেখ রুমান শিকদার, শেখ আবু রায়হান সিদ্দীকী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধব দীপ, রাজীব নন্দী, রেজাউল করিম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মামুন আ. কাইউম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধান, মো. রহমতুল্লাহ, বিউটি মণ্ডল, সহিবুর রহমান, মো. সারোয়ার আহমাদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অর্ণব বিশ্বাস, মাহমুদুল হাসান, কাজী এম আনিছুল ইসলাম, মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মৌসুমী খাতুন, মাহদী আল মুহতাসিম, শরীফুল ইসলাম, শামিম হোসেন, ফারজানা তাসনিম পিংকি, মাজিদুল ইসলাম, উজ্জ্বল তালুকদার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মনিরা বেগম, ফরহাদ উদ্দিন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. শেখ শফিউল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, আফতাব হোসেন, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) শিক্ষক এম মাহবুব আলম, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষক তপন মাহমুদ লিমন।