রোজিনাকে আটক রাখার ব্যাখ্যা চায় মানবাধিকার কমিশন

সচিবালয়ে সাড়ে পাচঁ ঘণ্টা আটক রেখে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে ‘হেনস্তা’র ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে এই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2021, 10:09 AM
Updated : 18 May 2021, 12:04 PM

মঙ্গলবার মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা (বিকল্প দায়িত্ব) মো. আজহার হোসেনের স্বাক্ষরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা জানানো হয়েছে।

পাশাপাশি রোজিনা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না করে এভাবে আটক রাখার বিষয়কে ‘অমানবিক’ বলেও মনে করছে কমিশন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অনুমতি ছাড়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে গতকাল (সোমবার) দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়।

“জাতীয় মানবাধিকার কমিশন উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়।“

কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগমকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দীর্ঘ সময় ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষে একজন সাংবাদিককে আটক রাখার বিষয়টি নিন্দনীয়।“

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য উল্লেখ করে এতে আরো বলা হয়, “রোজিনা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না করে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়, যা অমানবিক বলে কমিশন মনে করে।“

এই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব এর নিকট ব্যাখ্যা চেয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এর আগে সাংবাদিক রোজিনাকে মুক্তি দিয়ে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট- সিপিজে।

ঢাকায় সাংবাদিকরাও রোজিনার মুক্তি চেয়ে সোমবার রাতেই শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভ করেন।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলন ‘বয়কট’ করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ)।

সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তার কক্ষে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।

পরে রাতে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয় এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডিবিধির কয়েকটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ।

মঙ্গলবার আদালতে নিয়ে রোজিনা ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিতে পুলিশের আবেদন করলে তা শুনানি শেষে নাকচ করে দিয়েছে আদালত।

এছাড়া তার জামিনের বিষয়ে আংশিক শুনানি শেষে বিচারক বাকি শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার তারিখ রেখেছেন।

রোজিনা ইসলাম ওই অফিস থেকে কোনো নথি সরানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর তার সহকর্মীরা বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করায় তিনি ‘আক্রোশের শিকার’ হয়ে থাকতে পারেন।

আরও পড়ুন-