‘লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ, প্রজ্ঞাপন রোববার

চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2021, 02:21 PM
Updated : 15 May 2021, 02:21 PM

শনিবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। ১৭ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত আরেক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে আগামীকাল রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।”

বিধিনিষেধের আগের শর্তগুলোই বহাল থাকছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ সর্বশেষ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এবারের ঈদের ছুটি ছিল ১৩ থেকে ১৫ মে। ঈদের ছুটিতে সবাইকে নিজেদের কর্মস্থলের এলাকাতেই থাকার নির্দেশনা ছিল সরকারের।

তবে মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনে দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ থাকলেও ঈদ চলে আসায় মানুষ মরিয়া হয়ে পরিবারের কাছে ছুটছেন।

সরকারের শত অনুরোধ, বিভিন্ন পদক্ষেপ, বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা- কোনো কিছুতেই ঠেকানো যায়নি জনস্রোত।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় শনিবার থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিআইডব্লিউটিসি। কিন্তু যাত্রীদের চাপ সামলাতে না পেরে শনিবার দুপুরে একটি ফেরি ছাড়লে তাতে গাদাগাদি করে পার হন যাত্রীরা। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান

এরই মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে অনিয়ন্ত্রিত ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। বিপণিবিতানগুলোতেও উপচে পড়া ভিড়ে ঈদের কেনাকাটায় সংক্রমণে বিস্তার নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ফরহাদ হোসেন বলেন, “লোকজন ঢাকা ছেড়ে বিভিন্ন গন্তব্যে গেছে তাদের বাড়ি থেকেও ফিরতে অন্তত ১০ দিন লাগবে। সংক্রমণের কী অবস্থা দাঁড়ায় বোঝা যাচ্ছে না। এ জন্য মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

ঈদের দিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এক সংবাদ সম্মেলনে ঈদের পর শহরমুখী জনস্রোত ‘উদ্বেগের’ কারণ হয়ে দাড়াতে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। 

গ্রামমুখী মরিয়া ঈদযাত্রার পর আবার তাদের ফেরার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, "ঈদে গ্রামমুখী মানুষের বাধভাঙ্গা জনস্রোত দেখা যাওয়ায় বিশেষজ্ঞরা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারে নতুন ধাক্কা লাগার আশঙ্কা করছেন। ঈদ পরবর্তীকালে শহরমুখী জনস্রোত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বারবার বলার পর স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা উধাও ছিল ঢাকায় ঈদ কেনাকাটায়।

"স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শকে উপেক্ষা করার মাশুল গুনতে হতে পারে। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি ও শতভাগ মাস্ক পড়তেই হবে।"

এমন প্রেক্ষাপটে এসব মানুষের ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার কর্মস্থলে ফেরার সময় আবারও যানবাহন সঙ্কটে একই রকম পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন অনেকে।

মহামারী বিস্তারের ঊর্ধ্বগতি রোধে কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় ধাপে ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন নামে পরিচিতি পায়।

দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে এর আগে ৫ এপ্রিল থেকে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ দিয়ে লকডাউন দেয় সরকার। পরে যা কঠোর করা হয়।