তার এই বিশ্রাম আসলে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা। শনিবার সকালে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে বেলা ১২টা পর্যন্ত পকেটে এসেছে একশ টাকার সামান্য বেশি। কিন্তু রিকশাওলাদের তো আর ঈদে ছুটি নিলে চলে না!
“ঈদের মইধ্যে মানুষজন বাসা-বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। আমাগো কপাল ফাডা। কি করমু? বইসা আছি গাছের ছায়ায়।”
গতবছর রোজার ঈদও এসেছিল লকডাউনের মধ্যে, তখনও পরিস্থিতি মোটামুটি এরকমই ছিল।
সকালে মিন্টো রোডের ধারে রাস্তা ঝাড়ু দিচ্ছিলেন পরিচ্ছন্নতা কর্মী শিফালী বেগম। বিধিনিষেধে দূরপাল্লার গাড়ি বন্ধ থাকায় এবার তার গাইবান্ধায় গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয়নি।
সড়কগুলোতে যানবাহনের ভিড় নেই, কোলাহলও নেই। মাঝেমধ্যে দুয়েকটি প্রাইভেট কার বা অটোরিকশা চলে যাচ্ছে হুশ করে। আর আছে রিকশা। গরমের মধ্যে দিনের বেলা ফুটপাতে পথচারীও নেই তেমন।
রামপুরা, বেইলি রোড, কাকরাইল, মালিবাগ, শান্তিনগর, পল্টন, বিজয়নগর, গুলিস্তান, ফকিরেরপুল, মতিঝিল, নর্থসাউথ রোড ঘুরে ঈদের পরের ঢাকার এমন চিত্রই দেখা গেল।
এমনিতে প্রতি রোজার ঈদে রাজধানী থেকে গ্রামমুখী মানুষের ঢল নামে। লকডাউনের বিধিনিষেধের কারণে অনেকে এবার গ্রামে যেতে পারেননি। তবে ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ছাড়া মানুষের সংখ্যা একেবারে কমও নয়।
স্বাভাবিক সময়ে ঈদের পরদিন ফাঁকা ঢাকায় অনেকেই আত্মীয়-বন্ধুর বাসায় বেড়াতে যেতেন, কিশোর-তরুণদের ঢল নামত বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। এবার সেসব নেই।
বেইলি রোডের বাসিন্দা শামীমুর রহমানের সেঙ্গ কথা হয় শান্তিনগর বাজারে। তিনি জানালেন ঈদের আগে ঠেলাগাড়িতে সবজি নিয়ে বিক্রেতারা গলিতে ঘুরত। কিন্তু ঈদের পরদিন তারা আসেনি। তাই তিনি সবজি কিনতে বাজারে এসেছেন। কিন্তু বাজারও ফাঁকা।
“আমার দুই বাচ্চা। তারাও বিরক্ত। কী করব, এমন অবস্থা যে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।”
এই পরিস্থিতির মধ্যেও শুক্রবার ঈদের ব্কিালে ঢাকার হাতিরঝিলে বিনোদনপ্রত্যাশীদের ভিড় জমেছিল। বিকালে রোদ পড়লে শনিবারও মানুষ বেড়াতে বের হবে বলে আশায় আছেন রিকশা চালক নুরু মিয়া।
আর গুলিস্তান মোড়ে অটোরিকশা চালক আজাদ জানালেন, বেলা ১২টার দিকে সায়েদাবাদ থেকে কয়েকজন যাত্রীকে তিনি মালিবাগে নিয়ে গেছেন। তারা এসেছেন চান্দিনা থেকে।
“এটা দেখে মনে হচ্ছে স্যার, ২/১ দিনের মধ্যে ঢাকায় মানুষজন আসতে শুরু করবে। আমাদের ইনকাম বাড়বে।”