পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ইনভেস্টিগেশন বিভাগ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, আগের দিন সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রাজধানীর অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র জসিমুল ইসলাম জ্যাক (২৫), হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার মারকাজুস সুন্নাহ আল ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষক আব্দুল মুকিত (২৯), সিলেটের আল হিদায়া ইসলামিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র আমিনুল হক (২০) এবং সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী সজীব ইখতিয়ার (২০)।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান উপ মহাপরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের গ্রেপ্তার সদস্যরা ঢাকা ও সিলেটে পুলিশ ও বিজিবির টহল টিমে হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এজন্য তারা রেকিও করে।”
গ্রেপ্তার ওই চারজন এবং তাদের অন্য সদস্যরা ‘সায়েন্স প্রজেক্ট’ নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতেন। ওই গ্রুপের দুইজন ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে চলে গেছেন এবং বাকিরাও দেশে কোনো ‘নাশকতা ঘটিয়ে’ আফগানিস্তানে চলে যাওয়ার ‘প্রস্তুতিতে ছিলেন’ বলে পুলিশের এই বিশেষায়িত ইউনিটের ভাষ্য।
জঙ্গিরা হঠাৎ কেন বিজিবিকে নিশানা করল- এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, “জঙ্গিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাদের হামলার লক্ষ্য হিসেবে রেখেছে।”
এ দলের জঙ্গিদের আফগানিস্তানে ‘হিজরত’ করা নিয়ে এক প্রশ্নে ডিআইজি আসাদুজ্জামান বলেন, “আপনারা জানেন, আমাদের দেশে যে কটি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয়, তাদের অধিকাংশই আল-কায়েদার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে দাবি করে।
“আনসার আল ইসলাম উপমহাদেশের আল-কায়েদার শাখা বলে দাবি করে। সেই সূত্র ধরেই তারা হয়ত আফগানিস্তানে হিজরত করতে গিয়ে থাকতে পারে। তবে এটা তাদের ভাষ্য, এ বিষয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি।”
আরেক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, “তাদের পরিকল্পনা ছিল অক্সিজেন গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানো। এ বিষয়টি তাদের পরিকল্পনা পর্যায়ে ছিল।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার ওই ‘জঙ্গিরা’ সম্প্রতি সংগঠনের নেতাদের নির্দেশে সিলেটের কোতোয়ালি থানা এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে হোটেল ম্যানেজারকে আহত করে পালিয়ে যায়।
ওই চারজনের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে খোঁজ-খবর করা হচ্ছে বলে জানান কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের আসাদুজ্জামান।
গ্রেপ্তার চারজনকে পরে ঢাকার আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের ১০ দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।
শুনানি শেষে বিচারক মাসুদ-উর-রহমান তাদের সাত দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।