আইন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর আবেদনের বিষয়ে মাননীয় আইনমন্ত্রীর অভিমতসম্বলিত নথি রোববার সকালে আইন ও বিভাগের সচিবের দপ্তর হতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।”
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা ও দণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয়েছিল। দুটি নির্দিষ্ট শর্তে তাকে সাময়িক মুক্ত দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো শিথিল করার আইনি সুযোগ আছে কি না তা দেখে তিনি মতামত পাঠাবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
নিয়ম অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এখন সার সংক্ষেপ যাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেলেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে অনুযায়ী আদেশ জারি করবে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দুজনেই এর আগে বলেছেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদন সরকার ‘ইতিবাচক দৃষ্টিতেই’ বিবেচনা করছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটা নবায়নের বিষয়েও সরকার ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগারে যাওয়ার পর গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটলে পরিবারের আবেদনে সরকার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়।
৭৬ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সে সময় শর্তে দেওয়া হয়, মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
কিন্তু এখন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার বুধবার রাতে ওই আবেদন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাতেই তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় মতামতের জন্য। সেই মতামত এখন আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে পৌঁছেছে।
আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার গত বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, খালেদা জিয়াকে কোন দেশে নিতে চায় তার পরিবার, সে বিষয়ে আবেদনে কিছু উল্লেখ নেই। তবে গণমাধ্যমের খবরে ঘুরেফিরে আসছে যুক্তরাজ্যের কথা, যেখানে তার বড় ছেলে তারেক রহমান এক যুগের বেশি সময় ধরে পরিবার নিয়ে থাকছেন।
যুক্তরাজ্যের নেওয়া সম্ভব না হলে সিঙ্গাপুর বা সৌদি আরবে নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও গণমাধ্যমে কথা হচ্ছে। কিন্তু যে দেশেই নেওয়ার চেষ্টা হোক না কেন, সব জায়গাতেই মহামারীর মধ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধের কড়াকড়ি থাকবে।
সেসব জটিলতা কীভাবে কাটানো হবে, হাসপাতালে থাকা খালেদা জিয়া উড়োজাহাজে দীর্ঘ যাত্রার ধকল সামলানোর মত অবস্থায় আছেন কি না- এসব বিষয়ে তার পরিবার বা বিএনপি নেতাদের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনও আসেনি।
উল্লেখ করেননি। শুধু চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার কথা বলেছেন। আর কিছু বলেননি।”
পুরনো খবর