দূরপাল্লার বাস চালুর দাবি পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের

ঈদে ঘরমুখো মানুষদের জন্য অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার গণপরিবহন চালুর দাবি জানিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2021, 06:44 AM
Updated : 8 May 2021, 07:23 AM

সেসঙ্গে শ্রমিকদের অনুদান-বেতন-বোনাস ও যানবাহন মেরামতের জন্য সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা চেয়েছেন তারা।

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। সেখানে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সাংসদ শাজাহান খান।

এসব দাবি মানা না হলে সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা ঈদের নামাজ শেষে নিজ এলাকার বাস ও ট্রাক টার্মিনালে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

শিমুলিয়ার ঘাটে শনিবার এই ফেরিতে উঠা বেপরোয়া মানুষের ঢেউ সামলাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাই ফেরি চালানো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলেও গাদাগাদি করে এই যাত্রীদের পার করতে বাধ্য হয়।

শাজাহান খান বলেন, মালিক-শ্রমিক নেতারাও বিশেষজ্ঞ। তাদের বক্তব্য না শুনে পরিবহন চলাচল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়।

“যদি ফেরির অবস্থা দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন, মানুষ যেভাবেই হোক বাড়ি যেতে চায়। আমাদের বিশেষজ্ঞরা মানুষের কথা বুঝতে চান না।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধে চলমান লকডাউনের মধ্যে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও জেলার ভেতরে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

মহামারী মোকাবেলার স্বার্থে এবারের ঈদে বাড়ি না গিয়ে যে যেখানে আছেন ধৈর‌্য ধরে সেখানেই থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তারপরও পদ্মা পার হয়ে দক্ষিণের জেলাগুলোতে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ছোট যানবাহন, এমনকি পণ্যের ট্রাক বা পিকআপে চড়েও অনেকে ঢাকা থেকে ভেঙে ভেঙে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়ার ঘাটে যাচ্ছে।

যাত্রীর চাপে শুক্রবার ফেরিতে পরিবহন বন্ধ রেখে গাদাগাদি করে শুধু মানুষ পার করা হয়। পরিস্থিতি সামলাতেই শনিবার থেকে দিনে ফেরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরও মানুষ সকালে হাজার হাজার মানুষ গিয়ে ঘাটে ভিড় করেছে।

রাতের বেলায় লুকিয়ে বাস চালানোর অভিযোগের জবাবে শাজাহান খান বলেন, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এটা ঠেকানো পুলিশ ও প্রশাসনের দায়িত্ব।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রায় ৭০ লাখ পরিবহন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র দুই থেকে আড়াই লাখ শ্রমিক সরকারের অনুদান হিসেবে আড়াই হাজার করে টাকা পেয়েছে।

খুব কষ্টে কাটছে শ্রমিকদের দিন। পরিবহন মালিকদের অবস্থা ভালো নয়। সুদের বোঝা বৃদ্ধি পাওয়ায় বহু গাড়ি লিজিং কম্পানি বাজেয়াপ্ত করেছে। মালিকেরা সরকারের ট্যাক্স ফি কর ইত্যাদি দিতে পারছেন না।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সাংসদ মশিউর রহমান রাঙ্গা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ ও জেনারেল সেক্রেটারি আবু রায়হান এসময় সেখানে ছিলেন । 

সংবাদ সম্মেলনে গণপরিবহন ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগের বিপরীতে ঋণের সুদ মওকুফসহ কিস্তি আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিতকরণ ও ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট নিয়ে ক্লাসিফাইড ঋণ আনক্লাসিফাইড করার দাবিও তোলা হয়।