পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত

মহামারীর কারণে এক বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রমে গতি আনতে অনলাইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2021, 05:38 PM
Updated : 6 May 2021, 05:38 PM

বৃহস্পতিবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির ভার্চুয়াল বৈঠকে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস হলেও পরীক্ষা হচ্ছে না।

সংক্রমণের নিম্নগতির মধ্যে গত ২২ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আগামী ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

২৪ মে পর্যন্ত অনলাইনে ক্লাস চললেও কোনো ধরনের পরীক্ষা নেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।

তবে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ঘোষিত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ফলে গত এক বছর ধরে দুই সেমিস্টারের পরীক্ষা আটকে থাকায় ৪৯ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক লাখ শিক্ষার্থী দীর্ঘ সেশনজটের শঙ্কায় রয়েছেন।

মহামারী পরিস্থিতি আরও দীর্ঘ হতে পারে, সে আশঙ্কা থেকেই শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানিয়েছেন ইউজিসির সদস্য সাজ্জাদ হোসাইন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মহামারী কতদিন থাকবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। আমরা চিন্তা করছি, এই অবস্থাটা দুই-তিন বছর চলতে পারে। তখন তো শিক্ষার্থীদের চাকরির ব্যাপার আছে। তারা মানসিকভাবেও ভেঙে পড়বে।

“সেজন্য আমাদের এখন পরীক্ষা নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের একই সেমিস্টারে বসিয়ে রাখা যাবে না। তারাও মানসিক চাপে আছে। তাদের পরীক্ষা নিয়ে পরের সেমিস্টারে দিতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)

পরীক্ষা আয়োজন ও মেধা যাছাইয়ের যথাযথ পদ্ধতি একাডেমিক কাউন্সিলে বেছে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলেছে ইউজিসি।

“এতদিন পরীক্ষা বন্ধের কথা বলা ছিল। এখন আমরা বলেছি, যে পরীক্ষাটা বন্ধ ছিল, সেটা নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে। যেগুলো হাতে-কলমে, সেগুলো ইনপার্সন নিতে হবে। যেখানে যেটা প্রযোজ্য সেভাবে নিতে হবে।”

অনলাইনে পরীক্ষা নিতে ইউজিসি কিছু নির্দেশনা দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “যাতে মূল্যায়নটা সঠিক হয়। ম্যাক্সিমাম অ্যাসেসসেমন্টটা যেন হয়, সেই কারণে একটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে।”

ইউজিসির পক্ষ থেকে মৌখিক পরীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে বলেও জানান সাজ্জাদ হোসাইন।

“আমরা ভারত, যুক্তরাজ্যে দেখেছি, আমাদের পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট প্রতিবন্ধকতা বিবেচনা করে পরীক্ষাটা নিতে হবে। মোবাইল বেইজড পরীক্ষাটা আমরা সাজেস্ট করছি। মোবাইলে যেন পরীক্ষা নিতে পারে।

“ভাইভায় আমরা জোর দিয়েছি। সৃজনশীল প্রশ্ন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের সেট তৈরির ওপর জোর দিয়েছি। সেটার জন্য শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ের ব্যাপারেও জোর দিয়েছি।”

ইউজিসির এই সদস্য জানান, সেশনজট এড়াতে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে সরাসরিও পরীক্ষা নিতে পারবে।

“সেক্ষেত্রে যতটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্ভব নিতে হবে। অনেক ছোট বিশ্ববিদ্যালয় আছে, তারা যদি সরাসরি পরীক্ষা নিতে পারে, নেবে।”