কক্সবাজার থেকে নোমান ফয়েজীকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামে আনার পর বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক।
তিনি বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকারিয়া নোমান ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে যেসব নাশকতা বিশেষ করে পুলিশের ওপর হামলা, ডাকবাংলো ভাংচুর ও ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগ প্রত্যেকটি ঘটনায় জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
“এসব ঘটনার যারা মাস্টারমাইন্ড, যাদের নির্দেশে, ইন্ধনে এবং অর্থের জোগানে এসব হয়েছে, প্রত্যেকটির বিষয়ে তিনি নিজেকে সম্পৃক্ত রাখার কথা স্বীকার করেছেন।”
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও হরতাল থেকে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হয়।
কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির মূল কেন্দ্র হাটহাজারীতে কয়েকদিন সংঘাত চলে, যাতে কয়েকজন নিহত হন।
হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দিয়ে থানায় আক্রমণ করে, ডাকবাংলো ভাংচুর করে এবং ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগ করে। সড়কও অবরোধ করে রেখেছিল দুই দিন।
পুলিশ সুপার রশিদুল হক বলেন, হাটহাজারী ছাড়াও দেশের অন্যান্য যেসব স্থানে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে, প্রত্যেকটি কম-বেশি নোমান ফয়েজীর ‘নলেজে’ ছিল।
“যেগুলোর কোথাও কোথাও তার ইন্ধন, কোথাও নির্দেশ ছিল। আবার কোথাও কোথাও তার সহায়তা ছিল।”
কী উদ্দেশ্যে ২৬ মার্চ থেকে হেফাজত এ ধরনের তাণ্ডব চালিয়েছিল- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, “দেশ ও সরকারকে অস্থিতিশীল করা ছিল হেফাজত ইসলামের লক্ষ্য। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এত দ্রুত সময়ে তা নিয়ন্ত্রণ করে ফেলবে, সেটা তারা বুঝতে পারেনি।”
পুলিশ কর্মকর্তা রশিদুল হক বলেন, নোমান ফয়েজী তার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের কথা তাদের কাছে স্বীকার করেছেন এবং তার মোবাইল ফোন থেকেও এর প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
“আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমি তাকে বলেছি, আপনি যে বেশভূষা নিয়ে চলেন এবং আপনার যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য, সেগুলোর সাথে এসব যায় কি না … এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।”
তদন্তের স্বার্থে এসব কথোপকথন গোপন রাখার কথাও জানালেও ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ হিসেবে এগুলো আদালতে জমা দেওয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
হাটহাজারীতে সহিংসতার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোমান ফয়েজীকে পাঁচ দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবারই আদালত থেকে অনুমতি নিয়েছে পুলিশ।