মমতাকে অভিনন্দন মোমেনের, ‘অনিষ্পন্ন’ বিষয় সমাধানের আশা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টানা তৃতীয় জয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘আন্তরিক অভিনন্দন’ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2021, 07:55 AM
Updated : 5 May 2021, 08:04 AM

বুধবার পাঠানো এক চিঠিতে মমতাকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে অনিষ্পন্ন বিষয়গুলোর সমাধানের আশা প্রকাশ করেছেন মোমেন।

পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চিঠির বিষয়বস্তুর বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ‍মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে লিখেছেন, “আপনার অঙ্গীকার ও সহযোগিতার মাধ্যমে দুদেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে এবং অনিষ্পন্ন বিষয়গুলোর সমাধান হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ‘অনিষ্পন্ন’ বিষয়ের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি, যা ২০১১ সাল থেকে ঝুলে আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের আগে দুই দেশের পানি সম্পদ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিস্তার পানিবন্টন চুক্তির বিষয়ে দুইপক্ষ একমত হয়েছিল।

মনমোহন সিংয়ের সফরেই বহু প্রতীক্ষিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় তা আটকে যায়।

নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি সরকার ভারতের ক্ষমতায় আসার পর তিস্তা চুক্তি নিয়ে আশার কথা শোনা গেলেও মমতার মত বদলায়নি। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য পানি নিশ্চিত করতে এ বিষয়ে বরাবরই শক্ত অবস্থান তার।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের চিঠিতে তিস্তার পানিবণ্টনের কথা উল্লেখ না করলেও ইঙ্গিত যে সেদিকেই, তা স্পষ্ট বলে মনে করেন অনেকে।

চিঠিতে মোমেন আরও লিখেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস ধারাবাহিকভাবে তৃতীয়বারের মত সরকার গঠনে জনগণের সমর্থন লাভ করেছে, যা আপনার নেতৃত্বের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের জনগণের অব্যাহত আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন।

”আমরা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ, কারণ আপনি বাঙালির দীর্ঘ লালিত মূল্যবোধ ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ’ ধারণ করেছেন এবং এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু সারাজীবন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান এবং সাম্প্রতিক বছরে দু’দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো আরো প্রসারিত হয়েছে।

“অবিভক্ত ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, মূল্যবোধ এবং বংশানুক্রমিক সংযোগ দু’দেশের জনগণের সম্পর্ককে অনন্য ও শক্তিশালী করেছে। বিশেষকরে, পশ্চিমবঙ্গের জনগণ বাংলদেশিদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছে।”

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিববর্ষ এবং বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনের এ বিশেষ বছরে ’পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমর্থন ও আত্মত্যাগকে’ স্মরণ করেন মোমেন।

তিনি আরও লেখেন, “অজানা শত্রু করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্ব নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের সস্মূখীন হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ দু’দেশের পারস্পরিক সম্পদ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

“আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সকলে সম্মিলিতভাবে এ মহাবিপদ থেকে মুক্ত হয়ে শিঘ্রই স্বাভাবিক জীবন ও জীবিকায় ফিরতে পারব।”