ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব: হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল কাসেমী গ্রেপ্তার

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নেতা জুনায়েদ আল কাসেমীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2021, 12:20 PM
Updated : 1 May 2021, 01:13 PM

শনিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সিআইডির জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার জিসানুল হক জিসান জানান।

তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতার ঘটনায় অন্তত চারটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জুনায়েদ আল কাসেমী।

তিনি হেফাজতের কোন পর্যায়ের নেতা জানতে চাইলে জিসান বলেন, “হেফাজতে ইসলামীর একজন প্রভাবশালী নেতা তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্প্রতি যে নাশকতার ঘটনা ঘটে, তার নেতৃত্বদাতাদের অন্যতম তিনি।”

সেসব মামলায় জুনায়েদ আল কাসেমীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে হাজির করা হবে বলে জানান সিআইডির জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার।

শনিবার ভোরে হেফাজতের কেন্দ্রীয় এই নেতাকে গ্রেপ্তারের দিন সকালে দলটির তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন সিআইডির ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “যারা তাণ্ডবের ইন্ধনদাতা-পরিকল্পনাকারী তারা স্পটে থাকুক বা না থাকুক, তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।”

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থক ও মাদ্রাসা ছাত্ররা ভাংচুর চালায়।

তাদের তাণ্ডবকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস ও জেলা গণগ্রন্থাগারসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর করার পাশাপাশি আগুন দেওয়া হয়।

এসব ঘটনায় দায়ের করা ৫৫টি মামলার মধ্যে নয়টির তদন্ত করছে সিআইডি। এছাড়া ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা সদরে মাদ্রাসাছাত্রদের চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে পাঁচটি তদন্তও সিআইডি পেয়েছে।

মোদীর সফরের সময় হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও হরতালকে কেন্দ্র করে শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া নয়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়।

এরপর বিভিন্ন মামলায় একে একে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক দলটির ডজনের বেশি সাবেক কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার শুরু করে পুলিশ।

এপ্রিল মাসের শেষ দুই সপ্তাহেই বেশিরভাগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এসব নেতাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও শুরু করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

পুলিশের দাবি, হেফাজত নেতারা নাশকতার বড় ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রক্ষমতা দখল।

এমন গ্রেপ্তার অভিযানের মধ্যে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় ২৫ এপ্রিল রাতে। এরপর ভোর রাতের দিকে নতুন আহবায়ক কমিটির ঘোষণাও দেয় দলটি।