হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে শারুন বলছেন, তার সাবেক স্ত্রী সাইফা রহমান মিমের সঙ্গে তানভীরের সম্পর্ক গড়ে ওঠার খবর মোসারাত জাহান মুনিয়া গত বছর তাকে জানিয়েছিলেন, তবে তা মেসেঞ্জারে।
গত সোমবার ঢাকায় মুনিয়ার আত্মহত্যা এবং তার বোনের করা মামলায় আনভীরকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার আসামি করার পর মুনিয়া-আনভীরের একটি ফোনালাপ সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি মুনিয়া-শারুনের হোয়াটসঅ্যাপে কথিত কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশটও আসে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শারুন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হোয়াটসঅ্যাপে যে কথোপকথন ছড়ানো হচ্ছে, তা ভুয়া। এটি ফরেনসিক টেস্ট করলে পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
তবে মুনিয়া গত বছর মেসেঞ্জারে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সাবেক স্ত্রীর বিষয়ে কথা বলেছিলেন বলে জানান শারুন।
“পরে সে মেসেঞ্জারে বলেছিল, আমার স্ত্রীর সাথে সায়েম সোবহান আনভীর পরকীয়া করছে। তখন তাকে আমি জানিয়ে দিই যে বিষয়টি আমি জানি, এ ব্যাপারে আমার করার কিছু নেই। কেননা সে আমার সাবেক স্ত্রী।”
শারুনের সঙ্গে ২০১৯ সালে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটে।
শারুন বলেন, “আমাকে না জানিয়ে আনভীরের সাথে দেশের বাইরে ভ্রমণ করাসহ বিভিন্ন কারণে তাকে তালাক দেওয়া হয়।”
আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক শারুন অভিযোগ করেন, ‘কিছু’ মিডিয়া তার বিরুদ্ধে ‘প্রপাগান্ডা চালিয়ে তার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।
শারুন সম্প্রতি চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল মোরশেদ চৌধুরীর আত্মহত্যার ঘটনায় তাকে জড়িয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ মালিকানাধীন সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ধারাবাহিক প্রতিবদেন প্রকাশের দিকে ইঙ্গিত করেন।
ওই ঘটনার মধ্যেই মুনিয়ার আত্মহত্যার মামলায় জড়িয়ে গেছেন বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনভীর।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সায়েম সোবহান তানভীর কলেজছাত্রী মুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন, গুলশানে ফ্ল্যাট ভাড়া করে তাকে রেখেছিলেন। কিন্তু বিয়ে না করে উল্টো হুমকি দেওয়ায় মুনিয়া আত্মহত্যা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, মুনিয়া আসামি আনভীরের ‘শত্রুর’ সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলে তাকে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনার’ অভিযোগ এনেছে মুনিয়ার পরিবার।
এই ঘটনায় আনভীরের কোনো বক্তব্য কোনো গণমাধ্যমই পায়নি।
বুধবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সচিব মাকসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি ফ্যাক্টরিতে আছি। এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।”
মুনিয়া ও শারুনের কথিত কথোপকথনের স্ক্রিনশট পুলিশে নজরে এসেছে। তবে এনিয়ে কোন কর্মকর্তা মুখ খুলতে চাননি।
ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার সুদীপ চন্দ্র চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তদন্তে সব বিষয় রেখেছি, এসবও থাকবে।”
এনিয়ে শারুনকে জিজ্ঞাসাবদ করা হয়েছে বলে খবর ছড়ালেও তা অস্বীকার করেন তিনি।
“আমরা তার (শারুন) সাথে এই মামলার তদন্ত সংক্রান্ত অনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কথা বলিনি,” বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে শারুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একজন ব্লগারের সাথে কথা হয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ কথা বলেননি। কোনো কিছু জানতেও চাননি।”
এদিকে মুনিয়া ও আনভীরের অডিওটির বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সুদীপ বলেন, “ওই অডিওটি আমরা শুনেছি। মেয়ে কণ্ঠটি মুনিয়ার বলে তার বড় বোন নিশ্চিত করেছেন।”
আরও পড়ুন