টিকার জন্য শিগগিরই চীনের সঙ্গে চুক্তি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা আমদানির জন্য শিগগিরই একটি চুক্তি হবে বলে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2021, 12:45 PM
Updated : 28 April 2021, 12:45 PM

বুধবার জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১৫০ শয্যার অ্যাজমা সেন্টারে কোভিড ইউনিট উদ্বোধনের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা জানান তিনি।

টিকা নিয়ে চীনের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি ‘অনেক দূর’ এগিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আমরা রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। চায়নার সঙ্গেও চিঠিপত্র আদান-প্রদান করেছি। অল্পসময়ের মধ্যে আমরা সিনোফার্মের সঙ্গেও চুক্তিবদ্ধ হতে পারব।”

করোনাভাইরাসের প্রথম টিকা হিসেবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা ‘কোভিশিল্ড’ গত ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশে জরুরি ব্যবহারের অনুমতি পায়। তার আগেই সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি হয়।

কোভিশিল্ড দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে দেশে গণ টিকাদান শুরু হয়। কিন্তু সরবরাহ সঙ্কটে ভারত থেকে টিকার নতুন চালান না আসায় অন্য উৎস থেকে টিকা আনার বিষয়ে উদ্যোগী হয় সরকার।

এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি করা ‘স্পুৎনিক-ভি’ টিকা আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। পাশাপাশি চীন থেকেও টিকা আমদানির উদ্যোগ নেওয়ার কথা সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা চলছে যেন আমরা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাই। সে বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাগিদ দিচ্ছেন, বেক্সিমকো তাগিদ দিচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকেও যতটুকু তাগিদ দেওয়া সম্ভব আমরা দিচ্ছি।”

চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা থাকলেও গত চার মাসে দুই চালানে পাওয়া গেছে মোট ৭০ লাখ ডোজ। নিজেদের চাহিদা মেটাতে ভারত রপ্তানি বন্ধ রাখায় বাংলাদেশের বাকি টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি।

বক্ষব্যাধি হাসপাতালে কোভিড ইউনিট নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা যেহেতু সংক্রামকব্যাধি হাসপাতাল। এখানে চিকিৎসার উন্নত যন্ত্রপাতি আছে। এই হাসপাতালে যারা আছেন, তারা প্রশিক্ষিত, সাহসী। তারা আরও ভালো সেবা দিতে পারবেন।”

দেশে মার্চের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার খানিকটা কমে আসার তথ্য তুলে ধরে এই অবস্থান ধরে রাখার ওপর জোর দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমরা খেয়াল করেছি রোগী কমে এসেছে। বর্তমানে প্রায় অর্ধেক শয্যা খালি আছে। অর্থাৎ চাপ কমে গেছে।

“এর পেছনে অনেক কারণ আছে। লোকজন মাস্ক পরে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। এছাড়া লকডাউনের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হয়েছে কম। এ কারণে হয়ত এটা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য আশার আলো।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানের থেকে দেখা যায়, গত সপ্তাহে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তার আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৫ শতাংশ কমেছে। এ সময় নমুনা পরীক্ষাও কমেছে, তবে মৃত্যু বেড়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আবার সংক্রমণ বাড়তে যে ‘সময় লাগবে না’, সে বিষয়ে সতর্ক করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ভারতের কী অবস্থা হয়েছে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। আমরা চাই না সে ধরনের পরিবেশ তৈরি হোক।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।