যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৮টা ২১ মিনিটে আসামের ধেকিয়াজুলি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তর-উত্তরপশ্চিমে ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ৩৪ কিলোমিটার।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তীব্র এ ভূমিকম্পে কয়েকটি ভবনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কেউ হতাহত হয়েছে কিনা তা রাজ্য প্রশাসন খতিয়ে দেখছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, “আসামে বড় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। আমি সবার মঙ্গল কামনা করছি এবং সাবধানে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। সব জেলা থেকে তথ্য নেওয়া হচ্ছে।”
ভূমিকম্পের পর কিছু বাড়ির দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বাসিন্দারা। আরও কম্পনের উদ্বেগে লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ান।
২০ বছর বয়সী জ্যেতিষ্মান দেকা বলেন, “এরকম ব্যাপক কাঁপুনি জীবনে দেখি নাই।”
ভারতের কয়েকটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে ও প্রতিবেশী ভুটানেও জোরালো কম্পন অনুভূত হয়েছে। শত শত লোক দৌড়ে তাদের ঘর থেকে বের হয়ে এসেছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সহকারি সৈয়দ সামসুজ্জামান সানু জানান, তীব্র মাত্রার এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৯৭ কিলোমিটার উত্তরে রেকর্ড করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভূকম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ঢাকায় ৩, সিলেটে ৪ ও উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, দিনাজপুরসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫ মাত্রার অনুভূত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত আর্থ অবজারভেটরি সেন্টার থেকে ৪০৬ কিলোমিটার উত্তরে এর উৎপত্তিস্থল রেকর্ড করা হয়।
এ অধ্যাপক বলেন, “মনিপুর অঞ্চলে ভূমিকম্পের প্রবণতা রয়েছে, সেখানে বেশ ভূমিকম্প হয়। ১০-১৫ বছরের নিকট অতীতে আসামের এ অঞ্চলে তীব্র মাত্রার ভূমিকম্পের রেকর্ড নেই।”
সর্বশেষ গত ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় ভূম্পন অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫।
এর আগে ৫ এপ্রিল রিখটার স্কেলে ৫.১ মাত্রার ভূকম্পন হয় উত্তর উত্তর পশ্চিমে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল ভুটানে। ঢাকা ও পঞ্চগড়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ভূকম্পন অনুভূত হয়।