সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্থলবন্দরগুলোতে যাত্রী চলাচলে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন রোববার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভারতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় আমাদের নাগরিকদের রক্ষায় সেখান থেকে আপাতত লোক আসা বন্ধ করছি আমরা। এটা দুই সপ্তাহের জন্য।”
মহামারী নিয়ন্ত্রণে কঠোর লকডাউনের কারণে ভারতের সঙ্গে আকাশ পথে চলাচল আগে থেকেই বন্ধ আছে। এখন স্থলপথেও যাত্রী আসা বন্ধ হল। তবে স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন চলবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ জনসংখ্যার দেশ ভারতকে বেসামাল অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। গত চার দিন ধরে প্রতিদিনই সেখানে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় বিশ্ব রেকর্ড হচ্ছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত এক দিনে তিন লাখ ৪৯ হাজার ৬৯১ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে রোববার। মৃত্যু হয়েছে রেকর্ড দুই হাজার ৭৬৭ জনের।
ভারতে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর মোট সংখ্যা এক কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আর মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে এক লাখ ৯২ হাজার ৩১১ জনে।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, দিল্লির অনেক হাসপাতাল নতুন রোগী নিচ্ছে না। অক্সিজেনের অভাবে অনেক হাসপাতালে রোগী মারা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসের অতি সংক্রামক নতুন ধরনগুলোই ভারতকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। সে কারণে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করার দাবি কয়েকদিন ধরেই দেশে আলোচনায় ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে রোববার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ভারত সীমান্তে চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত আসে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞতিতে জানিয়েছে, ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বিজিবির প্রতিনিধিরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের ভিসায় ১৫ দিনের কম মেয়াদ আছে, তারা বেনাপোল, আখাউড়া ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরতে পারবেন। সেজন্য তাদের দিল্লি, কলকাতা বা আগরতলায় বাংলাদেশ মিশন থেকে অনুমতি নিতে হবে এবং সীমান্ত পার হওয়ার আগের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা আরটিপিসিআরে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ‘নেগেটিভ’ সনদ অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। দেশে ফিরে তাদের অবশ্যই দুই সপ্তাহের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, পণ্যবাহী যানবাহনগুলোকে যথাযথভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে এবং পণ্য আনার সঙ্গে যুক্ত ড্রাইভার-হেলপারদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
রেলের মাধ্যমে কেবল আমদানি-রপ্তানি চালু রাখার বিষয়ে উৎসাহিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।