তবে সেই টিকা ঠিক কবে হাতে পাওয়া যাবে তা নিয়ে কথা না হলেও মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই তা হবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
খুরশীদ আলম রোববার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকার বিষয়ে শুক্রবার বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসানের সঙ্গে তার কথা হয়েছে।
“পাপন সাহেব পরশুদিন আমাকে বলেছেন, আপনার মিনিমাম কত হলে চলবে? আমি বললাম, ২০ লাখ ডোজ যদি হয় তাহলে শর্টটা কাভার দিয়ে দিতে পারব, আমার আর কোনো সমস্যা থাকে না। তিনি বললেন, ঠিক আছে এটা আপনি পেয়ে যাবেন চিন্তা কইরেন না। তবে এক্সাক্ট কোনো ডেট নিয়ে কথা হয়নি।”
এর আগে দুপুরে জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনার শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি সাংবাদিকদের বলেন, মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে কোভেক্স থেকে এটা ফাইজারের এক লাখ ডোজ টিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
“তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটাই আমরা আশা করছি যে… আমাদের ঘাটতির… যেটুকু সম্ভাবনা ২০ লাখ ডোজ আমাদেরকে বেক্সিমকোর ঊর্ধ্বতন মহল জানিয়েছে যে তারা এই টিকাটা এর মধ্যে এনে দেবে।”
তিনি বলেন, চীনের সিনোফার্ম বাংলাদেশকে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে কর্মরত চীনের কর্মীদের ব্যবহারের জন্য টিকা আনারও অনুমতি চেয়েছে।
“এই দুটির ব্যাপারে ডিরেক্টর জেনারেল ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন তাদের অনুমোদন দিয়েছে। আমরা টিকাটা গ্রহণ করব বলে তাদের জানিয়েছি। তারা আমাদের যেদিন দেবে, সেদিন আমরা তা গ্রহণ করব।”
তবে ফাইজারের টিকা ও চীনের টিকা সিনোভ্যাক কত ডোজ করে, কীভাবে প্রয়োগ করা হবে এবং সেগুলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে দেওয়া যাবে কিনা সে বিষয়টি আপাতত স্পষ্ট করা যায়নি।
সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারের কেনা এবং উপহার হিসেবে ভারতের পাঠানো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার মোট ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা হাতে পেয়েছে বাংলাদেশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ২৪ এপ্রিল (শনিবার) পর্যন্ত ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮০ জনকে এই টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২১ লাখ ৫৫ হাজার ২৯৬ জন দ্বিতীয় ডোজও পেয়েছেন।
এর মধ্যে মজুদ কমে আসায় এবং সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা না কাটায় সোমবার থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত রোববার জানিয়েছে সরকার।
সব মিলে শনিবার পর্যন্ত দেওয়া ৭৯ লাখ ৫৪ হাজার ১৭৬ ডোজ টিকা ধরলে মজুদ আছে ২২ লাখ ৪৫ হাজার ৮২৪ ডোজ।
এখন যে টিকা মজুদ আছে তা দিয়ে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের টিকা কার্যক্রম চালানো যাবে বলে অধিদপ্তরে জানিয়েছে।
সে হিসেবে আরও ২০ লাখ টিকা পাওয়া গেলে যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তারা সবাই দ্বিতীয় ডোজ পাবেন। এর মধ্যে বাড়তি সরবরাহ না এলে টিকাদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে।
সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যওমে তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত বছরের নভেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৫০ লাখ ডোজ এলেও বিশ্বজুড়ে টিকার সঙ্কটের মধ্যে ফেব্রুয়ারির চালানে বাংলাদেশ ২০ লাখ ডোজ হাতে পায়। এরপর আর কেনা টিকা আর আসেনি। এর মধ্যে ভারত টিকা রপ্তানিই বন্ধ করে দেয়।
এর বাইরে ভারত সরকার দুই দফায় উপহার হিসেবে দিয়েছে মোট ৩২ লাখ ডোজ, সেগুলোও সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।