বুয়েটে ভর্তি: আবেদন শুরু ১৫ এপ্রিল, পরীক্ষা দুই ধাপে

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ১৫ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে শুরু হচ্ছে। অনলাইনে ২৪ এপ্রিল বিকাল ৩টা পর্যন্ত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2021, 02:30 PM
Updated : 10 April 2021, 02:53 PM

মেধাবী শিক্ষার্থীদের বেছে নিতে এবার দুই ধাপে ভর্তি পরীক্ষা নেবে বুয়েট। যেটির প্রথম ধাপ অনুষ্ঠিত হবে ৩১ মে ও ১ জুন।

৫ জুন মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করবে বুয়েট। আগামী ১০ জুন মূল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,"প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার মাধ্যমে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত ছয় হাজার শিক্ষার্থীকে মূল পরীক্ষার জন্য বেছে নেওয়া হবে। ভর্তি পরীক্ষার জন্য তাদেরকে আর দ্বিতীয়বার আবেদন করতে হবে না।“

গত বছর ৬০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা হয়েছিল জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “এ বছর মূল পরীক্ষায় মডিউল 'এ'-তে ‘ক’ গ্রুপ ও ‘খ’ গ্রুপে গণিত, পদার্থ, রসায়নের উপর ৪০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। তবে ‘খ’ গ্রুপে আবেদনকারীকে মডিউল 'বি'- তে মুক্তহস্ত অঙ্কন, দৃষ্টিগত ও স্থানিক ধীশক্তি পরীক্ষা দিতে হবে।"

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতিতে জেএসসি ও এসএসসির গড় ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন করায় ভর্তির পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যোগ্যদের বাছাই করতে দুই ধাপে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

এতে আরো বলা হয়, “‘ক’ গ্রুপে (প্রকৌশল ও বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পন বিভাগ) আবেদন, প্রাক-নির্বাচনী ও মূল ভর্তি পরীক্ষার আবেদন বাবদ এক হাজার এবং ‘খ’ গ্রুপে (প্রকৌশল ও বিভাগসমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পন বিভাগ, স্থাপত্য বিভাগে) এক হাজার ২০০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।"

কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুটি গ্রুপে আবেদন করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে চার শিফটে আগামী ৩১ মে ও ১ জুন ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া হবে।

তবে সেখানে কোনো পাশ নম্বর থাকবে না। পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত ৬ হাজার শিক্ষার্থীকে মূল পরীক্ষার জন্য বেছে নেওয়া হবে।

প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা থেকে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, "পরিসংখ্যানভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রতিটি শিফটে প্রার্থীদের মেধার বিন্যাসের সমতুল্যতা নিশ্চিত করা হবে। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলের মেধাক্রম অনুসারে ১ম থেকে ৬০০০তম (প্রতি শিফটের ১ম থেকে ১৫০০ তম) শিক্ষার্থীকে মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত করা হবে।"

৫ জুন প্রাক-নির্বাচনীর ফল প্রকাশের পর মূল ভর্তি পরীক্ষা হবে ১০ জুন।

আসন সংখ্যা

এবার পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং অন্যান্য এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত প্রার্থীদের প্রকৌশল বিভাগ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য মোট তিনটি এবং স্থাপত্য বিভাগে ১টি সংরক্ষিত আসনসহ মোট আসনসংখ্যা ১ হাজার ২১৫।

ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা

ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশের যে কোনো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে গ্রেড পদ্ধতিতে বিজ্ঞান বিভাগে (গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নসহ) জিপিএ ৪.০০ পেয়ে পাশ করতে হবে।

বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড নম্বর পেয়ে পাশ করতে হবে।

তবে উচ্চ মাধ্যমিক, আলিম বা সমমানের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন এই তিনটি বিষয়ে রেজিস্ট্রেশনসহ গ্রেড পদ্ধতিতে জিপিএ ৫.০০ এবং মাধ্যমিক, দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন এই তিনটি বিষয়ে ৩০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ২৭০ নম্বর পেয়ে পরীক্ষায় পাশ করতে হবে।

বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড নম্বর পেয়ে পাশ করতে হবে।

অপরদিকে ইংরেজি মাধ্যমে ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল পাশ করা প্রার্থীদের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ‘ও’ লেভেল পরীক্ষায় কমপক্ষে পাঁচটি বিষয় (গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজিসহ) এর প্রতিটিতে কমপক্ষে ' বি' গ্রেড এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন এই তিন বিষয়ের বিষয়ের প্রতিটিতে কমপক্ষে 'এ' গ্রেড পেয়ে পাশ করতে হবে।

ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রাপ্ত সকল সঠিক আবেদনকারীকে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযাগ দেয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

এছাড়া নূনতম যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সকল সঠিক আবেদনকারীকে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।

আবেদনের নিয়ম

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী আবেদন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে তা অনলাইনে সাবমিট করতে হবে।

সাবমিট করা শেষে একটি অ্যাপ্লিকেশন সিরিয়াল নম্বর দেওয়া হবে। পরের ধাপে এই নম্বরের বিপরীতে সোনালী ব্যাংকের অনলাইন পোর্টালে, সোনালী ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপে এবং নগদ, রকেট, নেক্সাস পে, বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আবেদন ফি জমা দিতে হবে।