করোনাভাইরাস: টিকার দ্বিতীয় ডোজ শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার

দেশে করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার; পাশাপাশি নিবন্ধিতদের প্রথম ডোজের টিকাও দেওয়া হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2021, 04:30 PM
Updated : 7 April 2021, 04:30 PM

দ্বিতীয় ডোজ টিকার জন্য এসএমএস পাঠানো শুরু হয়েছে সোমবার থেকেই। এসএমএসে দেওয়া তারিখ অনুযায়ী আগের টিকাদান কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে হবে।

সারাদেশে গণ টিকাদানের শুরুতে গত ৭ এবং ৮ ফেব্রুয়ারি যারা প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার তাদেরই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ অপারেশনাল প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক।

বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “যারা টিকা নেবেন তাদের কাছে এসএমএস যাওয়া শুরু হয়েছে। ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারির পাশপাশি এর আগে ২৬ ও ২৭ জানুয়ারির যারা পরীক্ষামূলক টিকা নিয়েছিলেন, তাদেরও অনেকে দ্বিতীয় ডোজ নিবেন। কেউ কোনো কারণে এসএমএস না পেলে কেন্দ্রে গিয়ে টিকা দিতে পারবেন।”

বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা। দুই মাসের ব্যবধানে সবাইকে এ টিকার দুটি ডোজ দেওয়া হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে শামসুল হক বলেন, “প্রথম ডোজের জন্য যারা নিবন্ধন করেছেন, তাদের অনেকে বিভিন্ন কারণে টিকা নিতে পারেন নাই। তারা যদি আসেন, আমরা তাদের টিকা দিয়ে দেব। আর প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হবে কিনা এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসে নাই। নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকাও দেওয়া হবে।”

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে বহু প্রতীক্ষিত টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।

পরদিন ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীদের পরীক্ষামূলকভাবে এ টিকা দেওয়া হয়। সেখানে কোনো জটিলতা দেখা না দেওয়ায় ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় সারা দেশে গণ টিকাদান।

সেদিন ৩১ হাজার ১৬০ জনকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়। প্রথমদিন টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে ২৩ হাজার ৮৫৭ জন পুরুষ এবং ৭ হাজার ৩০৩ জন নারী ছিলেন।

পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে ৪৬ হাজার ৫০৯ জন টিকা নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ৩৫ হাজার ৮৪৩ জন পুরুষ, ১০ হাজার ৬৬৬ জন নারী।

গণ টিকাদান শুরুর পর এ পর্যন্ত সারা দেশে ৫৫ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ জন টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৬৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৯ জন।

ঢাকাসহ সারা দেশে ১ হাজার ১৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে ঢাকার ৫০টি কেন্দ্র রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাতে এখন ৪৬ লাখের কিছু বেশি টিকা মজুদ আছে।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত ৫ নভেম্বর চুক্তি করে বাংলাদেশ।

ওই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। সে অনুযায়ী জানুয়ারিতে ৫০ লাখ ডোজ দেশে এলেও বিপুল চাহিদা আর বিশ্বজুড়ে টিকার সরবরাহ সঙ্কটের মধ্যে ফেব্রুয়ারির চালানে বাংলাদেশ ২০ লাখ ডোজ হাতে পায়।

এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে দুই দফায় ৩২ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে টিকা এসেছে এক কোটি দুই লাখ ডোজ।