মঙ্গলবার সকালে রামপুরা, মালিবাগ, কাকরাইল ঘুরে সড়কে আগের দিনের চেয়ে বেশি যানবাহন চলাচল চোখে পড়েছে। কোনো কোনো সড়কে ট্রাফিক সিগন্যালে দেখা গেছে যানবাহনের লম্বা লাইন।
কাকরাইলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এনামুল করীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকালও মালিবাগ থেকে হেঁটে কাকরাইলের অফিসে এসেছি। আজকে এই অবস্থা। মনে হয়েছে, গতকালের তুলনায় রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। রিকশা তো দেদারসে চলছে।”
মৌচাক, মগবাজার, এলিফ্যান্ট রোডের শপিং-মলগুলো বন্ধ থাকলেও অলি-গলির দোকান-পাট খোলা রয়েছে।
শান্তিনগর বাজার, মালিবাগ বাজার, রামপুরায় কাঁচাবাজার খোলা আছে। তবে তেমন একটা স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বাজারের আশ-পাশে খোলা রয়েছে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো।
সড়কে যানবাহন থাকলেও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অফিসমুখী মানুষজনকে দুর্ভোগ পোহাতেই হচ্ছে।
মতিঝিলে বেসরকারি অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, “একদিকে গণপরিবহন বন্ধ আবার সরকারি-বেসরকারি অফিসেও খোলা। যানবাহন নেই বলে আমাদের কষ্টের সীমা নেই। রিকশায় অফিসে আসা-যাওয়া করতে বেশি ভাড়া এখন গুণতে হচ্ছে।
“রামপুরায় থাকি, এতো দূর থেকে তো আর পায়ে হেঁটে আসা যায় না। সেজন্য আমাকে বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছে অফিসে যেতে।”
রাজধানীর ফুটপাতে কর্মজীবী শ্রমিকরাও বসে আছেন কাজের প্রত্যাশায়, মিলছে না। বিশেষ করে নির্মাণশ্রমিক বা ‘যোগালি’রা চরম বিপাকে পড়েছে।
সকাল ১০টার দিকে শান্তিনগরের দেখা গেল ১০-১৫ জন শ্রমিক বসে আছেন।
ময়মনসিংহের হেমায়েত উল্লাহ বলেন, “ভাই লকডাউনের কারণে আমরা কাজ পাচ্ছি না। কীভাবে চলব জানি না, বহুত কষ্টে আছি।”
কাদের নামে আরেক শ্রমিক বললেন, গতকালও তিনি কাজের জন্য দুপুর পর্যন্ত বসেছিলেন, কাজ পাননি।
কোভিড-১৯ বিস্তার রোধকল্পে সোমবার ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল বন্ধের পাশাপাশি শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তারাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ১১ দফা নিষেধাজ্ঞায় সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলা রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে একুশে বইমেলা এবং সিনেমা হলগুলো খোলা রাখা হয়েছে।
গত বছর মার্চ মাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সরকার অফিস-আদালত সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিল।
রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগ, রায়ের বাজার, ওয়ারী এলাকায় সংক্রমণ বেড়ে গেলে ১৪ দিন লকডাউন দিয়ে সব কিছু বন্ধ এবং যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত রাখা হয়েছিল।