বর্ণিল আয়োজনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

দীর্ঘ সংগ্রামের পথ বেয়ে অর্জিত স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে বাংলাদেশ, যে দেশের মানুষের সামনে এখন সোনালি ভবিষ্যতের হাতছানি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2021, 07:27 AM
Updated : 26 March 2021, 07:41 AM

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানিদের হাতে আটক হওয়ার আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান, সেই মুহূর্তে ঘোর অন্ধকার, হানাদারের গুলি আর বেয়োনেটে ক্ষতবিক্ষত দেশ।

এরপর চলে ৯ মাসের তীব্র লড়াই; ১৬ ডিসেম্বর আসে চূড়ান্ত বিজয়। শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ গঠনের পালা। ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সামনে সাফল্যের অনন্য এক উদাহরণ।

সুবর্ণজয়ন্তীর সঙ্গেই বাংলাদেশ উদযাপন করছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, যার হাত ধরে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল।

দিনের শুরুতে মিরপুর সেনানিবাসে ৫০ বার তোপধ্বনি দিয়ে শুরু হয় স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন। ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই জোড়া উদযাপনে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ১০ দিনের এই কর্মসূচি শুরু হয় ১৭ মার্চ, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে। আজ শুক্রবার স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির দিনে তা শেষ হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে রাজধানীর বিজয় সরণির দুই পাশে নানা ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

স্বাধীনতা দিবসের সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

বিকালে ঢাকায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের থিম ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা'। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, বিশেষ অতিথি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মহামারীর কারণে সীমিত উপস্থিতির এই অনুষ্ঠানে উন্মোচন হবে সুবর্ণজয়ন্তীর লোগো। ভারতের ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ‘মৈত্রী’ নামে বিশেষ রাগ পরিবেশিত হবে। বাংলাদেশে উদ্বোধন করা হবে ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল মিউজিয়াম’।

সাধারণ ছুটির এই দিনে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে তোলা হয় জাতীয় পতাকা।

ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো সুবর্ণজয়ন্তীর বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় গত কয়েক দিন ধরেই চলছে আলোকসজ্জা।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ফেডারেশন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। সব ক্ষেত্রেই রয়েছে মাস্ক পরা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা।

জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে শোভা পাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনায় প্রার্থনার পাশাপাশি মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনার কর্মসূচি রয়েছে।

দেশের শিশুপার্ক ও জাদুঘরগুলোতে আজ টিকেট লাগবে না। বিভিন্ন ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাগুলো দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সাধারণের দেখার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।