মহামারীর অবসরে অনেক সুখবর চিড়িয়াখানায়

ত্রাস হয়ে ওঠা করোনাভাইরাস মানুষের বিনোদনের সুযোগ কেড়ে নিলেও ঢাকায় জাতীয় চিড়িয়াখানার বাসিন্দাদের দিয়েছিল সাত মাসের স্বস্তি; সেই অবসরের সুফল এখন মিলছে বিভিন্ন প্রাণী পরিবারে নতুন অতিথির আগমনের খবরে।

সাবিকুন্নাহার লিপিসাবিকুন্নাহার লিপিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2021, 03:38 AM
Updated : 21 March 2021, 06:45 AM

জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক আবদুল লতিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মহামারীর সময়টায় বিভিন্ন প্রাণীর ১২০টি শাবকের জন্ম হয়েছে, যার মধ্যে চারটি জন্মেছে সম্প্রতি।

“চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকার কারণে পশুপাখির উপকার হয়েছে, ইমিউনিটি বেড়েছে। খাবার ভালো দিতে পেরেছি, পরিচর্যা ভালো হয়েছে। ওই সময় প্রাণিরা গর্ভধারণ করায় এখন তারা সন্তান প্রসব করছে।”

ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানায় আরবীয় ঘোড়ার ঘরে এসেছে নতুন অতিথি। বৃহস্পতিবার সকালেই এই পুরুষ ঘোড়া শাবকের জন্ম হয়েছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলে গত বছর ২০ মার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয় জাতীয় চিড়িয়াখানা। সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে ১ নভেম্বর শর্তসাপেক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য আবার খুলে দেওয়া হয়।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি এবং ১১ মার্চ একটি করে ঘোড়া, ২ মার্চ একটি জলহস্তি ও ৫ মার্চ একটি জেব্রা শাবক জন্ম নিয়েছে।

ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানায় নতুন জন্মানো পশুগুলোর মধ্যে একটি জেব্রার শাবকও রয়েছে। সারাদিন মায়ের সঙ্গে ছুটোছুটি করে ছানাটি। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

এরআগে গত বছর একটি জিরাফ, দুটি জলহস্তি, ১৮টি চিত্রা হরিণ, একটি মায়া হরিণ, একটি ঘোড়া, দুটি ইম্পালা, দুটি গাধা, একটি কমন ইল্যান্ড, ২৩টি ময়ূর, ১৩টি ইমু, ৩০টি বক, সাতটি ঘুঘু ও ১৫টি কবুতরসহ ১১৬টি শাবক জন্ম নেয়।

মিরপুরে ১৮৬ একরের চিড়িয়াখানায় নতুন-পুরানো মিলিয়ে এখন দুই হাজার ৮২০টি প্রাণী রয়েছে।

অনেক শাবক জন্মালেও মহামারীর কারণে বাইরে থেকে নতুন প্রাণী আনা সম্ভব হয়নি বলে জানান চিড়িয়াখানার পরিচালক।

ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানায় একমাস আগে জন্ম নেয় এলভিস নামের এই পুরুষ ঘোড়া শাবকটি। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

তিনি বলেন, “কোভিডের কারণে ২ কোটি টাকার দরপত্র বাতিল করে দিতে হয়েছে। প্রাণী এখন কেনা যাচ্ছে, কিন্তু আনার ব্যবস্থা নেই।”

দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে নতুন প্রাণী আনার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে আবদুল লতিফ বলেন, চারটি লটে এক জোড়া করে কমন ইল্যান্ড, শিম্পাঞ্জি, ক্যাঙ্গারু, কালো ভালুক, চশমা বানর, আফ্রিকার সিংহসহ আট ধরনের প্রাণী আনার কথা ভাবছেন তারা।

ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানায় ইমু পাখির পরিবারে নতুন ছয় অতিথি যুক্ত হয়েছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, অবকাঠামোর উন্নয়ন কাজ চলছে। এক মাসের মধ্যে এসব কাজ শেষ হবে জানিয়ে আবদুল লতিফ বলেন, “গণ্ডার, ময়ূর আর হাতির জন্য নতুন শেড করছি। বাঘ ও সিংহের খাঁচার সংযোগ পথও নির্মাণ করা হচ্ছে।”

পরিচালক জানালেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শঙ্কা দূর না হলেও এখন দর্শনার্থী সমাগম হচ্ছে স্বাভাবিক সময়ের মতই।

সাপ্তাহিক খোলার দিনগুলোতে সাধারণত ৮ থেকে ১০ হাজার এবং ছুটির দিনে ২০ থেকে ৩০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হচ্ছে বলে জানান তিনি।