যৌতুকের মিথ্যা মামলা: ফেঁসে গেলেন অভিযোগকারী নারী

যৌতুকের জন্য মারধরের মিথ্যা অভিযোগ তোলার দায়ে মামলার বাদিকে সাজা দিয়েছেন ঢাকার একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2021, 02:22 PM
Updated : 4 March 2021, 04:18 PM

দণ্ডিত মোছা. শামসুন্নাহার (২৭) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বিলকাঠালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ঢাকার মধ্য বাড্ডায় থেকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার তার ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাস বিনাশ্রম করাদণ্ডের রায় দেন।

ওই নারীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৭ এর ২ ধারায় তার শাস্তি হয় বলে ট্রাইবুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

বৃহস্পতিবার মামলাটিতে অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ঠিক করা ছিল।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলির জিজ্ঞাসায় বাদি শামছুন্নাহার বলেন, তিনি চাকরির প্রলোভনে পড়ে ময়মনসিংহের ধাপুনিয়ার মো. হান্নান, তার ভাই আব্দুর রাজ্জাক ওরফে তুলা মিয়া ও মাদারীপুরের রাজৈরের কবিরাজপুরের মাসুদ খানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

আদালতে কর্মরত আলমগীর নামে এক ব্যক্তি ও ময়মনসিংহের বাসিন্দা হাফিজ কাঞ্চনের কথামতো তিনি মামলা করেন। তারা হান্নানের পরচিত ছিল।

এই নারীর দায়ের করা মামলায় জামিনে থাকা হান্নান আদালতে বলেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। বাদিকে তিনি র‌্যাবের মাধ্যমে খুঁজে নিয়ে এজলাসে এসেছেন। এ নারীকে তিনি চিনতেন না। তার সঙ্গে কখনো কোনো সম্পর্ক বা কোনো কিছুর আদান-প্রদান ছিল না।

মিথ্যা মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০১৬ সালের ১০ জুন একলাখ টাকার দেনমোহরে হান্নানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আসামি তার কাছ থেকে যৌতুক দাবি করতে থাকেন। তাকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ১৯ মে হান্নান আরও যৌতুকের দাবিতে চুল ধরে তাকে মারধর করে। অপর আসামিরা মারধরে সহযোগিতা করে।

রায়ে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ২৬৫ (এইচ) ধারায় আসামি হান্নানকে খালাস দেওয়া হল। হান্নান চাইলে দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মিথ্যা মামলা দায়েরের অনুঘটক হাফিজ কাঞ্চন ও আলমগীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আলাদা মামলার আবেদন করতে পারেন।

মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তে হাকিমের কাছে হান্নান এবং শামসুন্নাহারকে স্বামী ও স্ত্রী হিসাবে সাক্ষ্যদাতা রিপন শেখ ও আফসার উদ্দিনকেও আসামি করে আলাদা মামলা করতে পারবেন।

ওই মিথ্যা মামলায় যিনি বাদির আইনজীবী হিসাবে কাজ করেছেন, তার দাখিল করা আর্জিতে স্বাক্ষর করেছেন, ঢাকার সেই আইনজীবীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে আলাদা মামলা করতে পারবেন মিথ্যা মামলায় খালাস পাওয়া হান্নান।

রায়ের পর শামসুন্নাহারকে কারাগারে পাঠান বিচারক।