শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, “মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনার সার্বিক বিষয়ের দ্রুত, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্ত করার জন্য আমরা বাংলাদেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।”
বিবৃতিদাতারা হলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার, ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট ডিকসন, কানাডীয় হাই কমিশনার বেনোয়া প্রিফঁতেন, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি টিরিংক, ফরাসি রাষ্ট্রদূত জ্যাঁ মারিও সুশো, জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহল্টৎস, ইতালির রাষ্ট্রদূত ইতালির নতুন রাষ্ট্রদূত এনরিকো নানজিয়াতা, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারউইজ, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন, স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্যান্সিসকো দে এসিস বেনিতেজ, সুইডিশ রাষ্ট্রদূত অ্যালেসান্দ্রা বের্গ ফন লিনডে এবং সুইস রাষ্ট্রদূত নাতালি শিয়ার।
বিবৃতিতে তারা বলেছেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায় বিচারের আগে গত বছরের ৫ মে থেকে কারাবন্দি ছিলেন মুশতাক আহমেদ। আমরা জেনেছি বেশ কয়েকবার তার জামিন আবেদন নাকচ হয়েছিল এবং এটা কারাবন্দি অবস্থায় তার প্রতি আচরণের ব্যাপারে উদ্বেগ তৈরি করছে।”
পেশায় ব্যবসায়ী মুশতাক অনলাইনে লেখালেখিতে বেশ সক্রিয় ছিলেন। সেটি কেন্দ্র করেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পড়েন তিনি।
মুশতাক আহমেদ
তদন্ত শেষে পুলিশ শুধু মুশতাক, কিশোর ও দিদারকে আসামি করে এ মাসের শুরুতে অভিযোগপত্র দেয়। দিদারুল ও মিনহাজ মান্নান জামিন পেলেও কিশোর ও মুশতাকের আবেদন নাকচ হয় কয়েক দফা।
বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কারাগারে মৃত্যু হয় ৫৩ বছর বয়সী মুশতাকের। কীভাবে তার মৃত্যু হল, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট কোনো বক্তব্য না আসায় সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকে।
ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ, মশাল মিছিল ও ঘেরাও কর্মসূচির পাশাপাশি গায়েবানা জানাজা পড়েছে বিভিন্ন সংগঠন। সন্ধ্যায় প্রগতিশীল ছাত্র জোটের একটি মশাল মিছিলে পুলিশ লাঠিপেটাও করেছে।
মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করেছে কারা কর্তৃপক্ষ; গাজীপুরের জেলা প্রশাসন গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটি।
শুক্রবার দিনভর কর্মসূচি থেকে ‘বিতর্কিত, ও ‘অস্পষ্ট. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিলের দাবি জানানো হয়। বিএনপিও বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানায়।
কূটনীতিকদের বিবৃতিতে ওই আইনের বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে উদ্বেগের কথা তুলে ধরে বলা হয়, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারাসমূহ ও তার বাস্তবায়ন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ও মানের সঙ্গে এর সঙ্গতি বিধান নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ রয়েছে, তা নিয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকব।”
মুশতাকের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতিও শোক প্রকাশ করা হয়েছে কূটনীতিকদের এই যৌথ বিবৃতিতে।
আরও পড়ুন