স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি

মঙ্গলবার রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে আয়োজিত ‘বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যম: প্রবণতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা এই আহ্বান জানান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2021, 07:00 PM
Updated : 23 Feb 2021, 07:00 PM

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহযোগিতায় ‘সমষ্টি’ নামে গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগ বিষয়ক একটি সংগঠন এই সভার আয়োজন করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভুইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমষ্টির পরিচালক ও চ্যানেল আইয়ের জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক মীর মাসরুর জামান।

অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিক, শিক্ষক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টসহ ৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

সমষ্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আলোচনায় বক্তারা মত প্রকাশের স্বাধীনতা/বাকস্বাধীনতা রক্ষায় গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একটি দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণ ও সার্বিক উন্নয়নের জন্য মত প্রকাশের স্বাধীনতা ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে অভিমত দেন তারা।

অধ্যাপক শফিউল আলম ভুইয়া বলেন, “গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মৌলিক বৈশিষ্ট্যই হল সেখানে মত প্রকাশের অধিকার থাকবে এবং স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশের অধিকারও সুনিশ্চিত থাকবে। কোনো মতামতে কারও ব্যক্তিগত অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে। তিনি সংক্ষুব্ধ হতে পারেন। কিন্তু কারও মনে আঘাত লাগবে বলেই সে সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে বা লিখতে পারবে না, তা আমাদের বা কোনো গণতান্ত্রিক দেশের সংবিধানই বলে না।”

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্যের বরাত দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাংলাদেশে প্রায়ই ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে সমালোচনা করার দায়ে মানহানির মামলা হয়ে থাকে। তাতে অভিযুক্তের হয়রানির শেষ নেই। দিনের পর দিন আদালতে ঘুরতে হয়। এক পর্যায়ে গিয়ে একটা মীমাংসা হয় বটে, কিন্তু বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষেরই অর্থ ও শ্রমের অপচয় হয়।

“সাংবাদিকদের উপর চাপ আছে। কখনও সেটা কর্পোরেট, কখনও বিজ্ঞাপন বা প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে এ রকম চাপ আসে। কিন্তু এর বাইরেও আরও এক ধরনের চাপ আছে, যেটা অনেক সময় সাংবাদিকদের সেলফ-সেন্সরশিপে বাধ্য করে।”

অনুষ্ঠানে সমষ্টি পরিচালিত গবেষণার তথ্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের কর্মসূচি পরিচালক মীর সাহিদুল আলম।

তিনি বলেন, “সারা দেশের ১০৮টি ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে পাঁচজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি ৮৮ জন সাংবাদিক আক্রমণের শিকার হন, ১৮ জন হুমকি পান, ১০ জন নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। এছাড়া সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ভাংচুর করা হয়। প্রভাবশালী, স্বার্থন্বেষী মহল, রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী ইত্যাদি পক্ষ এ ধরনের হামলাসহ হয়রানিমূলক তৎপরতার সঙ্গে জড়িত।”

এসব বিষয়ে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরসহ সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্য জোরদার করার সুপারিশ করা হয় গবেষণা প্রতিবেদনে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, অপরাজেয় বাংলার সম্পাদক মাহমুদ মেনন খান, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি শারমিন রিনভী, সিনিয়র সাংবাদিক শুচি সৈয়দ, মীর মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন হায়দার, গোলাম শাহানী বক্তব্য রাখেন।