মাহবুব তালুকদার পদত্যাগ করতে ‘প্রস্তুত’

সহকর্মীদের সঙ্গে ভিন্নমতের জন্য আলোচিত নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, দেশের ‘ভালোর জন্য’ তার পদত্যাগ করতে কোনো সমস্যা নেই।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2021, 10:36 AM
Updated : 15 Feb 2021, 10:36 AM

কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসি মেয়াদের চার বছর পার করার পর দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে ৪২ জন নাগরিকের দাবির প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন তিনি।

সোমবার নির্বাচন ভবনের নিজের দপ্তরে ‘ইসির পঞ্চম বর্ষের প্রারম্ভে আমার বক্তব্য’ শিরোনামে বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন এ নির্বাচন কমিশনার।

৪২ নাগরিক বর্তমান ইসি সদস্যদের পদত্যাগ দাবি করেছেন, এ বিষয়ে আপনার অবস্থান কী- এ প্রশ্নে মাহবুব তালুকদার বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে পদত্যাগ করলে যদি লাভ হয়, দেশের যদি কোনো উপকার হয়, তাহলে আমি যে কোনো মুহূর্তেই পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।”

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসি যাত্রা শুরু করে। ২০২২ সালে তাদের মেয়াদ শেষ হবে।

ভোট নিয়ে সমালোচনার পর বর্তমান ইসির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থসংশ্লিষ্ট গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ তুলে এর তদন্ত করতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছে ৪২ নাগরিক।

তারা আশা করছে, সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারা স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, “এই দাবিটা সম্ভবত আমাদের কাছে নয়, এটা অন্যত্র দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটা কথা আছে।”

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি এই পর্যন্ত তিনবার পদত্যাগের অনুরোধ পেয়েছি। এখন কতবার পদত্যাগ করব? সেটাও একটা প্রশ্ন।”

‘আত্মবিশ্লেষণ প্রয়োজন’

নির্বাচন কমিশনের পঞ্চম বর্ষের প্রারম্ভে মাহবুব তালুকদার চার বছরের কাজের আত্মবিশ্লেষণের কথা বলেছেন।

“পেছনের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে, আমাদের আত্মবিশ্লেষণ প্রয়োজন। প্রায় সব নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে আমরা তৃপ্তি বোধ করি। কিন্তু নির্বাচন বিষয়ে আমাদের সকল দাবি জনগণের উপলব্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”

‘কেবল রাজনৈতিক দল নয়, নীরব জনগোষ্ঠীর অশ্রুত ভাষা শ্রবণের প্রচেষ্টা থাকা প্রয়োজন’ বলে মনে করেন তিনি।

এখন নির্বাচনগুলো ‘এককেন্দ্রিক’ হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন এই নির্বাচন কমিশনার।

“এককেন্দ্রিক নির্বাচন বহুদলীয় গণতন্ত্রের উপাদান হতে পারে না। যেহেতু নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না, সেহেতু নির্বাচনের প্রতিটি আইনকানুন ও আচরণবিধি কঠোরভাবে পালনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে পরিপালন ও সংরক্ষণ করতে হয়।”

তিনি বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়া যথাযোগ্য সংস্কার না করার কারণে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা এখন গভীর খাদের কিনারে। এই সংস্কার নির্বাচন কমিশনের উপর নির্ভর করে না। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোএবং সংশ্লিষ্ট সকলের সমঝোতা প্রয়োজন।”

নানা সমালোচনার পরও এই ইসির কাজের শেষভাগে হলেও ভালো কিছু আশা করছেন মাহবুব তালুকদার।

“আমি একজন আশাবাদী মানুষ হিসেবে ‘যার শেষ ভালো তার সব ভালো’ এই প্রবাদ বাক্যটিকে কি আশ্রয় করতে পারি “