অরিত্রীর আত্মহত্যা: সাক্ষ্য দিলেন আরেকজন

ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষাথী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তার বাবার সহকর্মী সঞ্জয় মিত্র অধিকারী ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2021, 10:58 AM
Updated : 8 Feb 2021, 10:58 AM

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে সোমবার তিনি ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য দেন।

বিচারক মো. রবিউল আলম তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আগামী ৩ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যের জন্য দিন রাখেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সালাউদ্দিন হাওলাদার।

সঞ্জয় মিত্র অধিকারী এ মামলার জব্দ তালিকার সাক্ষী। ঘটনার দিন তার সামনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অরিত্রীর আত্মহত্যায় ব্যবহৃত টুল এবং ফাঁস লাগানোর ওড়না জব্দ করেন। সেই আলামত প্রদর্শনী হিসাবে জমা দেওয়া হয় আদালতে।

এর আগে অরিত্রীর বাবা মামলার বাদী দিলীপ অধিকারী, অরিত্রির মা বিউটি অধিকারী এবং তাদের বাড়ির নৈশ প্রহরী শুকদেব এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এ মামলার দুই আসামি হলেন অরিত্রীর দুই শিক্ষক নাজনীন আক্তার ও জিনাত আরা।

২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী (১৫)। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।

অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় বিক্ষোভে নামে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। ফাইল ছবি

স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। অন্যদিকে স্বজনদের দাবি, নকল করেনি অরিত্রী।

এরপর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নেওয়া হয় স্কুলে। তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে অপমান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিনই আত্মহত্যা করে অরিত্রী।

অরিত্রীর আত্মহত্যার পর তার সহপাঠীরা বিক্ষোভে নামে, ৪ ডিসেম্বর তার বাবা দিলীপ অধিকারী আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে পুলিশ ভিকারুননিসার প্রধান ক্যাম্পাসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজনীন আক্তার ও প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আরার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তাদের বিচার শুরু করে আদালত।

অরিত্রীর বাবার করা মামলায় শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাকেও আসামি করা হয়েছিল। তবে তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পাওয়ায় অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয় আদালত।

অরিত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় দণ্ডবিধির ৩০৫ ধারায় এ মামলার অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। এই ধারায় কোনো শিশুকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১০ বছর কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত সাজার বিধান রয়েছে।