বিমানের ১৭ সিবিএ নেতার বিষয়ে কী ব্যবস্থা, জানতে চায় হাই কোর্ট

ছয় বছর আগে দুর্নীতি দমন কিমিশন- দুদকের নোটিসে সাড়া না দেওয়া বিমান বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সের ১৭ সিবিএ নেতার বিষয়ে দুদক কী পদক্ষেপ নিয়েছে বা আদৌ কোনো পদক্ষেপ নিয়েছিল কিনা, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2021, 11:10 AM
Updated : 28 Jan 2021, 11:10 AM

আগামী সাত দিনের মধ্যে দুদককে তা জানাতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রুলের শুনানির পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।

এই ১৭ নেতা হলেন বিমানের তখনকার সিবিএ সভাপতি মো. মসিকুর রহমান, সহ-সভাপতি আজাহারুল ইমাম মজুমদার, আনোয়ার হোসেন, মো. ইউনুস খান, সাধাররণ সম্পাদক মো. মনতাসার রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল চৌধুরি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম, অর্থ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান, অফিস সম্পাদক মো. হারুনর রশিদ, প্রকাশনা সম্পাদক আবদুল বারি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. ফিরোজুল ইসলাম, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. আবদুস সোবহান, নারী বিষয়ক সম্পাদক আসমা খানম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম কায়সার আহেমেদ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আবদুল জব্বার ও মো. আবদুল আজিজ।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এম এ আজিজ খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিনউদ্দিন মানিক।

দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হতে ২০১৪ সালে এই ১৭ সিবিএ নেতাকে নোটিস দেয় দুদক। কিন্তু দুদকের তলবে হাজির না হয়ে তারা অভিযোগ অস্বীকার করে। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রচার-প্রকাশ হয়।

নোটিস পাওয়া নেতারা জানান, তারা দুদকের যেকোনো পদক্ষেপ আইনগতভাবে মোকাবেলা করবেন।

পরে প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করা হয়।

হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এর পক্ষে রিট আবেদনটি করা হয়। তখন রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আদালত রুল জারি করে।

বিমানের ‍দুর্নীতি তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুসারে বিমানের ১৭ সিবিএ নেতাকে হাজিরে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

বেসামরিক বিমান সচিব, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিমানের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সে রুলটি আজ শুনানির জন্য ওঠে। শুনানির পর আদালত দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন এই ১৭ সিবিএ নেতার বিরুদ্ধে দুদক কী পদক্ষেপ নিয়েছে বা আদৌ পদক্ষেপ নিয়েছিল কিনা, আগামী সাতদিনের মধ্যে তা জানাতে বলেছেন হাই কোর্ট।”

এ আইনজীবী বলেন, “দুদক আইনের ১৯(১)(ক) ধারায় দুর্নীতির তদন্ত, অনুসন্ধান, সমন জারি এবং তথ্য প্রদানের জন্য নির্দেশনা দিতে পারে। এ বিষযে নেওয়া পদক্ষেপ মানা বাধ্যতামূলক। কেউ তা অমান্য করলে তিন বছরের শাস্তিও হতে পারে।

বিমানের সিবিএ নেতারা দুদকের নির্দেশনা অমান্য করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এটি আইনের ব্যত্যয়।”

এ আইনজীবীর ভাষ্য, যেহেতু সিবিএ নেতারা প্রভাবশালী। তাই আইন তার নিজস্ব গতিতে না চললে আইনের শাসন ব্যহত হতে পারে এবং আইনের দৃষ্টিতে তা গ্রহণনযোগ্য নয়।

দুদকের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে আদালতে কোনো জবাব দাখিল করা হয়নি বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।