গত সোমবার হাই কোর্টের এক রুলের জবাবে দুদক জানায়, তদন্তকারী কর্মকর্তার ‘সরল বিশ্বাসের ভুলে’ নোয়াখালীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের সহকারী মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের ১৫ বছরের সাজা হয়।
বুধবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবি দুদকের এই ‘সরল বিশ্বাসের’ ব্যাখ্যাকে দায় এড়ানোর ‘অর্থহীন প্রয়াস’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “ভুল তদন্তের মাধ্যমে জালিয়াতি মামলায় মোহাম্মাদ কামরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল ও সাজার ঘটনায় দুদক কর্তৃক উচ্চ আদালতে ভুল স্বীকার এবং ‘মামলার এজাহার থেকে তদন্ত সকল পর্যায়ে ভুল হয়েছে’ মর্মে দুদকের আইনজীবীর স্বীকারোক্তিই প্রমাণ করে যে, প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের পেশাদারিত্ব কতোটা দুর্বল ও অদক্ষতায় ভরা।”
তিনি বলেন, “জাহালমের ঘটনা থেকে দুদক শিক্ষা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। একটি ঘটনার তদন্ত কাজ ১০ বছর ধরে চলেছে এবং বারবার তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও একজন নির্দোষ মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের ঘটনা ‘সরল বিশ্বাসে’ ঘটেছে বলে আদালতে দুদকের বয়ান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বরং পেশাদারিত্ব ও জবাবদিহির চূড়ান্ত ঘাটতির ফলে ‘জাহালমের ঘটনার’ পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।”
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, জাহালমের ঘটনার প্রেক্ষিতে দুদক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়নি।
“দুদকের মতো একটি ‘দুর্নীতি দমন’ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ জাতীয় ‘সরল বিশ্বাসের’ ভুল বার বার সংঘটিত হলে সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা বিনষ্ট হয়ে যায়, প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের দক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে, যা কাম্য হতে পারে না।”
ভুক্তভোগী কামরুল ইসলাম, আইন ও বিচার সংশ্লিষ্টরা সচেতন হওয়ায় উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করায় ঘটনাটি জানাজানি হয়েছে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “তিনি যদি জাহালমের ন্যায় একজন সাধারণ নাগরিক হতেন, তার পক্ষে কি বিচারিক আদালতের ১৫ বছরের জেল ও জরিমানা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো বিকল্প ছিল?
“না-কি এই দীর্ঘ জেল জীবন অতিবাহিত করতেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা অপরিহার্য।”