‘আশ্বাস পেয়ে’ সদরঘাট থেকে লঞ্চ চালুর ঘোষণা

অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিটিএ) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে দাবি পূরণের ‘আশ্বাস’ পেয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে ঢাকা সদরঘাট থেকে লঞ্চ চালুর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2021, 04:12 PM
Updated : 25 Jan 2021, 05:07 PM

লঞ্চ দুর্ঘটনার এক মামলায় আদালত দুই মাস্টারের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়ায় সোমবার দুপুর থেকে ঢাকা সদরঘাটের পন্টুন থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা।

এরপর সদরঘাট বিআইডব্লিটিএ অফিসে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক, লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, “আমি অত্যন্ত দুঃখিত যাত্রীদের দুর্ভোগের জন্য। যাত্রীদের দুর্ভোগে ফেরা আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। আমরা চেয়েছি জামিনযোগ্য মামলায় দুই মাস্টারকে জামিন দেওয়া হোক।”

এখন সরকারের ‘আশ্বাস’ পাওয়ায় শ্রমিকদের লঞ্চ নিয়ে পন্টুনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

কমোডর গোলাম সাদেক বলেন, “শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আশ্বাস দিয়েছেন। সুতরাং এই রাতেই যাত্রীরা সদরঘাট থেকে গন্তব্যে যেতে পারবেন।”

এক বছর আগে চাঁদপুরের হরিনাঘাটে অ্যাডভেঞ্চার-১ ও অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। কেউ মারা না গেলেও লঞ্চ দুটি ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এ নিয়ে মেরিন আদালতে যে মামলা হয়েছিল, তাতে দুই লঞ্চের মাস্টার রুহুল আমিন ও জামাল উদ্দিন জামিনে ছিলেন।

সোমবার তারা সেই মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। সেই খবরে নৌ শ্রমিকরা সদরঘাটের পন্টুন থেকে লঞ্চ সরিয়ে নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করে। ফলে ঘাটে আসা যাত্রীরা পড়েন দুর্ভোগের মধ্যে।

এমনিতে সদরঘাট থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, হাতিয়াসহ ৪৩ রুটে প্রতিদিন ৭০টি বেশি লঞ্চ ছেড়ে যায়।

কর্মবিরতি শুরুর পর বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায় ৩০টি লঞ্চ। এরপর লালকুঠি ঘাট থেকে চাঁদপুরের লঞ্চ ছাড়লেও সদরঘাটের পন্টুনে কোনো লঞ্চ ছিল না।

হঠাৎ করে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় ঘাটে এসে যাত্রীরা অনিশ্চয়তায় পড়েন। তাদের অনেককেই সন্ধ্যায় লঞ্চ ছাড়ার আশায় পন্টুনে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

রাতে লঞ্চ চালুর ঘোষণা এলে যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্থি ফেরে। অবশ্য দোটানার মধ্যে অনেকেই ততক্ষণে সদরঘাট ত্যাগ করেছেন।

রাত ৯টার দিকে এমভি সম্রাট-২, সুরভী-৯ কুয়াকাটা-২ সুন্দরবন-১১ সহ কয়েকটি লঞ্চ পন্টুনে ভিড়তে দেখা যায়।

এই লঞ্চগুলো দিয়ে বরিশাল, ডামুড্যা, ভাষাণচরের যাত্রীরা যেতে পারবেন বলে বিআইডব্লিটিএ এর পরিবহন পরিদর্শক হুমায়ূন কবির জানান।

তবে পটুয়াখালী ও ভোলার কিছু যাত্রীতেও রাতে লঞ্চের সন্ধানে সদরঘাটে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।