ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ১২৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে: তাপস

ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে অবকাঠামো উন্নয়ন ও বর্জ্য অপসারণে ১২৫ কোটি টাকার মতো ব্যয় করা হবে বলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2021, 05:55 PM
Updated : 20 Jan 2021, 05:55 PM

বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ‘মতিঝিল পার্ক’ উদ্বোধন করে ঢাকার খালগুলো উদ্ধার করে সেগুলোর উন্নয়নে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প প্রণয়ন করে তা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর কথাও জানিয়েছেন তিনি।

শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “গত বছর যে সকল জায়গায় জলাবদ্ধতা হয়েছিল, সে সকল জায়গায় আমরা কিছু অবকাঠামো উন্নয়নে হাত দিয়েছি এবং তা নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তবায়ন করছি। আপনারা লক্ষ করেছেন যে, এ পর্যন্ত আমরা যত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছি, তা নিজস্ব অর্থায়নে করেছি এবং আগামী মার্চ পর্যন্ত যে কার্যক্রমগুলো আমরা করব বলে পরিকল্পনা নিয়েছি, সেটাও পুরোটাই নিজ অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে।

“জলাবদ্ধতা দূরীকরণে এসব অবকাঠামো উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকার মতো এবং বর্জ্য অপসারণে ২০-২৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এই পুরো খরচ আমরা নিজস্ব অর্থায়ন হতেই ব্যয় করব।”

ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ওয়াসার কাছ থেকে দায়িত্ব নেওয়ার পর খাল দখলমুক্ত করার অভিযান এবং বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম চলমান আছে বলে জানান মেয়র তাপস।

তিনি বলেন, “আগামী বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে আমাদের ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলমান আছে এবং এটা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। খালগুলো দীর্ঘ দিন দখল অবস্থায় আছে, কিন্তু আমরা সেই দখলমুক্ত করার বিশাল কর্মযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছি।

“আপনারা জানেন গত ৩১ ডিসেম্বর ওয়াসার সাথে আমাদের যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে, সে অনুযায়ী আমরা তাদের কাছ থেকে যে যান-যন্ত্রপাতি পাব, সেগুলো হস্তান্তর প্রক্রিয়া এখনো চলমান আছে। যার কারণে আসলে আমাদের কিছুটা সক্ষমতার অভাব রয়েছে। কারণ পুরো এই দখলমুক্ত কার্যক্রম ত্বরাণ্বিত করার জন্য যে সকল যান-যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, সে রকম যান-যন্ত্রপাতি এখনও আমাদের কাছে নেই। যেমন- আমরা ওয়াসার কাছ থেকে লং-বুম চেয়েছি, সেটি এখনও আমরা পাইনি। যন্ত্রপাতি পেলে আমাদের কার্যক্রমটা ত্বরাণ্বিত করতে পারব। তারপরও আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রেখেছি। আগামী মার্চের মধ্যেই আমরা এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চাই।”

ঢাকার খালগুলোকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে এরইমধ্যে প্রকল্প প্রণয়ন করে তা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর কথা জানান ফজলে নূর তাপস।

তিনি বলেন, “প্রায় এক হাজার কোটি টাকার কাছাকাছির এ প্রকল্পের আওতায় আমরা খালগুলোর পাশে সাইকেল লেন, ওয়াক ওয়ে এবং নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করব। সব কিছু মিলিয়ে এগুলো আবার যেন দখলের পায়তারা না থাকে এবং জনগণ যেন একটি মানসম্পন্নন জীবন যাপন করতে পারে সে বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে আমরা প্রকল্প প্রণয়ন করেছি।

“আমরা আশাবাদী যে, আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিও যদি এই প্রকল্পটা পাস হয়, আমরা যদি আগামী বর্ষা মৌসুমের পরে সেপ্টেম্বর নাগাদ কাজ আরম্ভ করতে পারি, তাহলে আমরা দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারব।”

ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, “সারা ঢাকা শহরকে আমরা নান্দনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলব। আমাদের হবে ঐতিহ্যের ঢাকা, আমাদের হবে সুন্দর-সচল ঢাকা। আমাদের হবে সুশাসিত ঢাকা এবং ইনশাল্লাহ আমরা ২০৪১ সালের আগেই উন্নত ঢাকা উপহার দেব।

“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলাদেশ গড়তে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি আমাদেরকে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন। এরই ফলশ্রুতিতে আমরা ঢাকাকে উন্নত ঢাকা গড়ার বিশাল কর্মযজ্ঞ গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নত বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়। ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।”

এর আগে মেয়র তাপস নগরীর জিরানী খালের জোর ভিটা পয়েন্ট, কদমতলী ব্রিজ ও মান্ডা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শন করেন এবং নবনির্মিত যাত্রাবাড়ী ফুটওভার ব্রিজ, শাখারিবাজার ফুটওভার ব্রিজ ও নয়া বাজার ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধন করেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হকসহ সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।