৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে তাদের এ জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পিপলস লিজিংয়ের সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) মো. আসাদুজ্জামান খানের আবেদনে হাই কোর্টের কোম্পানি বেঞ্চের বিচারক মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন কাজী এরশাদুল আলম।
২০১৫ সালে এসএস স্টিল লিমিটেডের আইপিও (ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বা প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) শেয়ার কেনার জন্য ৬ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয় পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড।
২০১৮ সালে এসএস স্টিল লিমিটেডের আইপিও অনুমোদন পাওয়ার পর ওই টাকার বিপরীতে ১০ টাকা মূল্যের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার পিপলস লিজিং-এর অনুকূলে স্থানান্তর করা হয়।
ওই একই সময় বাকি ৩১ লাখ ২৫ হাজার শেয়ার পিপলস লিজিং-এর অনুকুলে স্থানান্তর না করে এম মোয়াজ্জেম হোসেন নিজের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবে স্থানান্তর করে নেন। তখন তিনি পিপলস লিজিং-এর চেয়ারম্যান।
আইনজীবী মেজবাহুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উচ্চ আদালতের অনুমোদন নিয়ে পিপলস লিজিং অবসায়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে মোয়াজ্জেম হোসেনের ৩১ লাখ ২৫ হাজার শেয়ার পিপলস লিজিংয়ে ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
“সে আবেদনের শুনানির পর আদালত কারণ দর্শাতে এম মোয়াজ্জেম হোসেন ও তিনটি প্রতিষ্ঠানসহ পাঁচ জনকে তলব করেছেন।”
বাকি দুজন হচ্ছে ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেনের পরিবারের সদস্য। এক জনের নাম ফারজানা মোয়াজ্জেম ও এহসান-ই-মোয়াজ্জেম বলে জানান এ আইনজীবী।
১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিংকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির আমানত ছিল ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। আর ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা, এর মধ্যে খেলাপিই ৭৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের হার ৬৬ শতাংশ।
২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে লোকসান গুনে প্রতিষ্ঠানটি। খেলাপি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আদায় করতে না পারায় আমানতকারীদের টাকাও ফেরত দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিনই মামলার শুনানি শেষে প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয় আদালত।
এছাড়া অবসায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার একজনকে অবসায়ক নিয়োগ দিতে বলা হয়।
পরে সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিকুইডেটর) হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান খানকে নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।