দণ্ডিত জেএমবি সদস্যের জামিন প্রত্যাহার করল হাই কোর্ট

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালে ফেনীর জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বর ও পৌরসভা এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবি সদস্য মো. রেদওয়ানুল হক ওরফে রেদওয়ানের জামিন প্রত্যাহার করেছে হাই কোর্ট। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2021, 03:37 PM
Updated : 18 Jan 2021, 03:37 PM

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সোমবার তাকে দেওয়া জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে আবেদনটি খারিজ করে দেয় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই বেঞ্চ।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী হাসিনা জাহান হাজারী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আমিনুল ইসলাম, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্ম্দ রেজাউল হক।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আবেদনকারীর আইনজীবী মামলার ঘটনাকে গোপন করেছেন। তিনি বলেছিলেন, আবেদনকারী গরিব। এর আগে তিনি আর জামিন আবেদন করেননি ইত্যাদি। পরে গত ১৪ জানুয়ারি তাকে জামিন দেয় আদালত।

“পরে আমাদের সন্দেহ হয়। ফাইল ঘেঁটে দেখি আবেদনকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির সদস্য। ফেনীর আদালত চত্বর ও পৌরসভা এলাকায় ২০০৫ সালে বোমা হামলা ঘটিয়েছেন। সে ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তার যাবজ্জীবন হয়েছে। ১৫ বছর ধরে কারাগারে আছেন। জামিন দেওয়ার আগে আদালত বারবার জিজ্ঞেস করেছিলেন, কিন্তু আইনজীবী এ বিষয়টি বলেননি। রাষ্ট্রপক্ষ বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে আদেশটি রিকল করা হয়। আজ আদালত তার জামিন আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে।”

জানতে চাইলে আবেদনকারীর আইনজীবী হাসিনা জাহান হাজারী ‘তথ্য গোপনের’ কথা অস্বীকার করেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তথ্য গোপন করার কি আছে? বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তার যাবজ্জীবন হয়েছে। আমি কোনো তথ্য গোপন করিনি।”

তাহলে আদালত কেন জামিন আদেশ রিকল করেছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আদালত কেন আদেশ রিকল করেছে সেটা আদালতের ব্যাপার। আমি বলতে পারব না।”

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট দেশের বিভিন্ন জেলার মতো ফেনীর জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বর ও পৌরসভা এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্যরা।

সে ঘটনায় ওই দিনই বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি আলাদা মামলা করে পুলিশ। ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর এ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই থেকে কারাগারেই আছে দণ্ডিত এই জেএমবি সদস্য।

পরে ওই বছরের ১০ নভেম্বর দুটি মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দুটি মামলাতেই আসামি ছয়জন।    

বিচারিক কাজ শেষে ২০০৬ সালের ৩ ও ১৭ জুলাই ফেনী জেলা জজ আদালত মামলার রায় দেয়। রায়ে ৬ আসামিকেই যাবজ্জীবন দেয় বিচারিক আদালত। ওই বছরই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন এই আসামি। আপিল এখন পর্যন্ত বিচারাধীন।