বুধবার দুপুরে ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল অবন্তিকাকে গ্রেপ্তার করে।
প্রনব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "পি কে হালদারের অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলার তদন্তে অবন্তিকা বড়ালের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এই কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।"
অবন্তিকাকে গ্রেপ্তারের পর প্রথমে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে বেলা ২টার দিকে তাকে নিয়ে আদালতের পথে রওনা হন তদন্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অবন্তিকা বলেন, কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে ‘কিছুই জানেন না’ তিনি।
অবৈধ সম্পদ আছে কিনা, এ প্রশ্নের উত্তরে অবন্তিকা বলেন, "এটা দুদক জানে, আমি বলতে পারব না।"
মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলে অবন্তিকা বড়াল দুদকে যাননি।
মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গত ৪ জানুয়ারি পি কে হালদারের আরেক ‘সহযোগী’ শংখ ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শংখ ব্যাপারীর নামে ধানমণ্ডি এলাকায় একটি ‘বিলাসবহুল’ ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়, যা পি কে হালদারের টাকায় কেনা বলে দুদকের ভাষ্য।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।
এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।
এর মধ্যে আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে গত বছরের শুরুতে পি কে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক তার ২৭৫ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, পি কে হালদার তার নিজের, আত্মীয়দের, বন্ধু ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে আটটি কোম্পানিতে ৬৭ কোটি ৩৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৯৯ টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যার ‘বৈধ কোনো উৎস’ অনুসন্ধানে মেলেনি।
এর মধ্যে সুখাদা লিমিটেড নামের একটি কোম্পানিতে অবন্তিকা বড়াল, প্রীতিষ কুমার হালদার এবং সুসমিতা সাহার নামে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে, যা আসলে পি কে হালদারের টাকা বলে দুদকের ধারণা।
পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে। তার মা লীলাবতী হালদার এবং অবন্তিকা বড়ালসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই কোর্ট।