মৃতপ্রায় নড়াই নদে নৌকা ভাসালেন নদীপ্রেমীরা

প্রতীকী নৌকা ভাসিয়ে দখল ও দূষণে হারাতে বসা নড়াই নদ রক্ষার আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন একদল নদীপ্রেমী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2020, 10:41 AM
Updated : 5 Dec 2020, 11:20 AM

শনিবার সকালে রাজধানীর বনশ্রীর মেরাদিয়া হাটের পাশে নড়াই নদের পাড়ে নোঙর, নদী রক্ষা জোট, নিরাপদ পানি আন্দোলন ও রিভার জাস্টিসের কর্মীরা এ কর্মসূচি পালন করেন।

নোঙর’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুমন শামস বলেন, রামপুরা খাল একসময় ছিল নড়াই নদ। মেরাদিয়া বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত নড়াই নদে দূষণ এখন মারাত্মক; নদীও বিলীন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) তথ্য মতে, নড়াই নদের উন্মুক্ত অংশের দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার। রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রী মেরাদিয়া বাস নিয়ে এটি সোজা পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়েছে। মিশেছে কায়েতপাড়ায় গিয়ে বালু নদীর সঙ্গে। নদের ধারাটি পশ্চিমে পান্থপথ হয়ে মিরপুর পেরিয়ে তুরাগে পড়ত।

সরকারি কাগজপত্রে কোথাও এ খালকে বেগুনবাড়ি খাল, কোথাও হাতিরঝিল, কোথায় আবার রামপুরা খাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

নড়াই নদের মাঝি হাবিবুর রহমান আশির দশক থেকে নৌকা চালাচ্ছেন নড়াই নদে। 

তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আশির দশকের শুরুর দিকে নড়াই নদের পূর্বাংশে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত এই নৌপথ চালু ছিল। ‌ তখন এই পথে হাতিরঝিল দিয়ে সবজি ও অন্যান্য জিনিসপত্র কারওয়ানবাজারে যেত। বিজিএমইএ ভবনের কাছে এখন যে মাছের পাইকারি বাজারে রয়েছে সেটি একসময় ছিল বালু শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছ ধরার ল্যান্ডিং পোর্ট।

সুমন শামস বলেন, রাজধানীর ৪৭ খালের ২৬টি কোনোরকমে অস্তিত্বের জানান দিয়ে যাচ্ছে এখন। একদা ঢাকায় খালের সংখ্যা ছিল শতাধিক; যেগুলো নগরীর চারপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। সেগুলো এখন মৃতপ্রায়।

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও বেপরোয়া ভূমি দখলেই খালগুলো বিলুপ্ত হওয়ার প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রতীকী নৌকা ভাসানো কর্মসূচিতে অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ তোফাজ্জল হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ মাকসুদ হাসান মুহসিন, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম, নিরাপদ পানি আন্দোলনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, নদী বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, মিহির বিশ্বাসসহ আরও অনেকে।