‘অনেক আশায়’ ভাসানচরে

তাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ আছে, সংশয় আছে কক্সবাজারের ক্যাম্পে থাকা অনেকের মনেও; তবে রোহিঙ্গাদের প্রথম যে দলটি ভাসানচরের আশ্রয়ন প্রকল্পে পৌঁছেছে, সারি সারি লাল ছাউনির ঘরগুলোতে ওঠার সময় তাদের চোখেমুখে দেখা গেল নতুন ঠিকানা পাওয়ার আনন্দ।

রিয়াজুল বাশার ভাসানচর থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2020, 04:48 PM
Updated : 5 Dec 2020, 10:20 AM

প্রিয়জনের লাশ আর পুড়তে থাকা ভিটেমাটি পেছনে ফেলে প্রাণ হাতে করে তিন বছর আগে তারা পৌঁছেছিল বাংলাদেশে। পরের মাসগুলো তাদের কেটেছে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে বাঁশ আর তারপুলিন দিয়ে তৈরি ছাপড়া ঘরে, অনিরাপদ আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।

ভাসানচরের নতুন ঠিকানায় প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবার নিজেদের জন্য আলাদা ঘর পাচ্ছে, আছে রান্নার ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, পানি আর পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা। সেই সঙ্গে আছে খেলার মাঠ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, এমনকি জীবিকা নির্বাহের সুযোগও।

কক্সবাজারের ক্যাম্পে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে এক লাখ মানুষকে অধিকতর নিরাপদ এই আশ্রয়ে সরিয়ে আনতে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে বাংলাদেশ সরকার।

স্থানান্তরের প্রথম ধাপে উখিয়ার কয়েকটি ক্যাম্প থেকে বাসে ও জাহাজে করে দুই দিনের দীর্ঘ যাত্রা শেষে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গার একটি দলটি শুক্রবার দুপুরে সাগরের মাঝখানে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের এই দ্বীপে এসে পৌঁছায়।

জাহাজ থেকে নামার পর তাদের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় ভাসানচর আশ্রয়ন প্রকল্পের খাদ্যগুদামে। সেখানে প্রশস্ত মেঝেতে বসে মোনাজাত শেষে তাদের যার যার নির্ধারিত ঘরে উঠতে বলা হয়।

গত তিনটি বছর কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে বাঁশ আর তারপুলিন দিয়ে তৈরি ছাপড়া ঘরে, অনিরাপদ আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কেটেছে তাদের

ওয়্যারহাউজ থেকে রোহিঙ্গারা যখন দলে দলে বের হতে শুরু করল, নাম ধরে হাঁকডাক আর উচ্ছ্বসিত হৈচৈর মধ্যে চাপা পড়ে গেল দুই দিনের যাত্রার ক্লান্তি।

ক্লাস্টার হাউজ ও শেল্টার স্টেশন মিলিয়ে গুচ্ছ গ্রামের আদলে গড়ে তোলা এই আশ্রয়ন প্রকল্পের নতুন বাসিন্দাদের যার যা্র ঘরে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল রোহিঙ্গা মাঝিদের (ছোট ছোট দলের নেতা)। তাদের সবাইকে দেখা গেল নিজের দলের সদস্যদের খুঁজে নিয়ে ঘরে তুলে দেওয়ার তৎপরতায় মহাব্যস্ত। 

যে যার পরিবারের লোকজন, ব্যাগ-পোটলা হাতে নিয়ে সন্তানকে কাঁধে তুলে এমনভাবে নতুন বানানো ঘরগুলোর দিকে ছুটলেন, যেন তাদের অনেকদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটল।

এরকম একটি দলের মাঝি মোহাম্মদ ইউনুস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, “আমরা অনেক আশা নিয়ে এসেছি। আমরা খুব খুশি।”

আর ভাসান চর আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক কমডোর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী সাংবাদিকদের বললেন, “প্রতীক্ষার অবসান হল। রোহিঙ্গাদের প্রথম দল এখানে আসায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এখানে আজ একটা উৎসবের দিন।”

নতুন সূচনা

ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য রোহিঙ্গাদের এই দলটিকে বুধবার রাতে উখিয়ার ক্যাম্প সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো করা হয় কয়েক ডজন বাস।

বৃহস্পতিবার সেসব বাসে করে মোট পাঁচটি কনভয়ে উখিয়া থেকে তাদের চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। বাসগুলোর সামনে ও পেছনে ছিল আইন-শৃংখলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা।

চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর রাতে তাদের রাখা হয় বিএএফ জহুর ঘাঁটির বিএএফ শাহীন স্কুল ও কলেজের ট্রানজিট ক্যাম্পে।

সেখান থেকে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তাদের বোট ক্লাব, আরআরবি জেটি ও কোস্ট গার্ডের জেটি থেকে নৌবাহিনী ছয়টি এবং সেনাবাহিনীর একটি জাহাজে তোলা হয় ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। জাহাজের ডেকে সবার বসার ব্যবস্থা হয় সারি সারি বেঞ্চ।

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প থেকে দুই দিনের দীর্ঘ যাত্রা শেষে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গার একটি দলটি শুক্রবার দুপুরে পৌঁছায় ভাসানচরের নতুন ঠিকানায়

রোহিঙ্গাদের ১০১৯টি ল্যাগেজ দুটি জাহাজে করে আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় ভাসানচরে। সকাল ১০টা ২০ মিনিটে জাহাগুলোর বহরের সঙ্গে রওনা দেয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের স্পিড বোট, ডিফেন্ডার বোট ও কান্ট্রি বোটসহ ডজনখানেক নৌযান।

জাহাজ ছাড়ার পর উৎসুক রোহিঙ্গারা চারদিক দেখতে থাকেন আগ্রহ নিয়ে। তাদের অনেকেই সাম্পানে বা অথবা ভেলায় চেপে নাফ নদী আর সাগর পাড়ি দিয়ে ২০১৭ সালের অগাস্টের পর কক্সবাজারে পৌঁছেছিলেন।

প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারের সঙ্গেই দেখা গেল ব্শে কয়েকজন করে শিশু। জাহাজের ডেকে খেলায় মেতে ওঠা এই শিশুদের সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় বাবা-মায়েদের।

বেশিরভাগ পরিবারের সঙ্গে দেখা গেল ছোট ছোট পুটলি। কেউ কেউ বস্তায় ভরে হাঁড়ি-পাতিল, আয়না, কাপড়-চোপড় এনেছেন।

জাহাজে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার এই যাত্রাপথে দুপুরের খাবারে ছিল মোরগ পোলাও।

কুতুপালং ক্যাম্প থেকে দুই স্ত্রী ও তিনসন্তান নিয়ে ভাসানচরে এসেছেন রমজান আলী। জাহাজে কথা হয় তার সঙ্গে।

রমজান বলেন, “ইজ্জত আর জীবন বাঁচানোর জন্য মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছি। এই দেশের সরকার আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। তারা যেখানে ভালো মনে করবেন, আমার সেখানে থাকতে আপত্তি নেই।”

ভাসানচরের জেটিতে ভেড়ার আগে জাহাজ থেকে সবার নজর নতুন ঠিকানার দিকে

নতুন জীবন

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে তাদের একটি অংশকে সাময়িকভাবে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।

সেজন্য নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরকে মানুষের বসবাসের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়।

মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে আগেই ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়েছিল।

এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলকে দেখার জন্য ভাসান চরে পাঠানো হয়।

তারা ফেরার পর তাদের কথা শুনে রোহিঙ্গাদের একাংশ ভাসান চরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে বলে জানানো হয় সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। শুক্রবার তাদের প্রথম দলটি সেখানে পৌঁছালো।

প্রকল্প পরিচালক মামুন বলেন, “যারা এখানে আসবেন, তাদের জীবনযাপনের জন্য সুন্দর ব্যবস্থাপনা এখানে করা হয়েছে। তারা এখানে আগের চেয়ে ভালো থাকবেন।”

এই আশ্রয়ন প্রকল্পে ১২০টি ক্লাস্টার বা গুচ্ছগ্রামের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার থাকার জায়গা। প্রতিটি ক্লাস্টারে রয়েছে ১২টি হাউজ। পাকা দেয়ালের ওপর টিনের শেডের প্রতিটি হাউজে রয়েছে ১৬টি করে কক্ষ। প্রতিটি কক্ষে চারজনের একটি পরিবারের থাকার ব্যবস্থা।

যার যার ঘরে ওঠার আগে ভাসানচর আশ্রয়ন প্রকল্পের খাদ্যগুদামে মোনাজাতে অংশ নেয় রোহিঙ্গারা

জাতিসংঘের আদর্শ মান অনুযায়ী, আবাসনের ক্ষেত্রে যেখানে মাথাপিছু ৩৭ বর্গফুট জায়গার কথা বলা হয়েছে, এসব কক্ষে তার চেয়ে বেশিই জায়গা রাখা হয়েছে বলে প্রকল্প পরিচালক জানালেন।

শুক্রবার যে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে এসেছেন, তাদের জন্য ৭, ৮, ৯ ও ১০ নম্বর ক্লাস্টারের ৪৮টি হাউজ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সরকারের অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শাসসু-দ্দৌজা বলেন, আপাতত ২২টি এনজিওর মাধ্যমে এই রোহিঙ্গাদের খাবার, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটানো হবে।

“প্রথম সাতদিন তাদের রান্না করা খাবার খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে প্রত্যেক পরিবারকে দেওয়া হবে এলপিজি সিলিন্ডার। তখন তারা নিজেরাই রান্না করে খেতে পারবে। এই এনজিওগুলো তাদের খাদ্য সরবরাহ করে যাবে।”

১৩ হাজার একর আয়তনের এই দ্বীপের মধ্যে ১৭০২ একর জমির চারপাশে উঁচু বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে জোয়ার ও জলোচ্ছাসের ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য।

এর ভেতরেই রোহিঙ্গাদের আবাসন ও অন্যান্য স্থাপনার জন্য ৪৩২ একর এবং ভবিষ্যতে প্রকল্পের সম্প্রসারণ ও বনায়নের কাজে ৯১৮ একর এলাকা রাখা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের থাকার প্রতিটি ক্লাস্টারের জন্য রয়েছে একটি করে চারতলা কম্পোজিট স্ট্রাকচারের শেল্টার স্টেশন। এই শেলটার স্টেশন ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার গতিবেগের ঘূর্ণিঝড়েও টিকে থাকতে সক্ষম।

প্রতিটি হাউজে বসবাসকারী নারী-পুরুষদের জন্য রয়েছে আলাদা গোসলখানা ও টয়লেটের ব্যবস্থা। প্রতিটি হাউজের ছাউনির ওপর রয়েছে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল। ঘরে আছে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা।

“আমরা অনেক আশা নিয়ে এসেছি। আমরা খুব খুশি,” বললেন এক রোহিঙ্গা দলের মাঝি মোহাম্মদ ইউনুস।

শিশুদের জন্য দুটি খেলার মাঠ তৈরি করা হয়েছে। দ্বীপের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য করা হয়েছে ২০ শয্যার দুটি হাসপাতাল এবং চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক। সেগুলো ধাপে ধাপে চালু হওয়ার কথা।

নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রকল্প এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে করা হয়েছে হাঁস, মুরগি, কবুতর, মাছ এবং ফল ও ফসলের খামার।

স্থানীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানোর জন্য দুগ্ধ খামার, ধান ও সবজি চাষ, হস্তশিল্প, নারীদের জন্য সেলাইয়ের কাজ এবং পর্যটনের প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে।

উদ্বেগ বনাম ‘আন্তরিক চেষ্টা’

ভাসানচরের এই আশ্রয়ন প্রকল্পে রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের ক্যাম্পের চেয়ে ভালো থাকবে বলে সরকার আশ্বস্ত করে এলেও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সরকারের এই উদ্যোগ থেকে দূরত্ব রেখে চলেছে বরাবরই।

বুধবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ বলেছে, রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে নেওয়ার যে পরিকল্পনা সরকার করেছে, তার সঙ্গে জাতিসংঘের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।

ভাসানচরের জেটিতে জাহাজ থেকে নামার পর রোহিঙ্গাদের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় মূল আশ্রয়ন প্রকল্পে।

ভাসান চরে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা যেন সব তথ্য জেনে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তা নিশ্চিত করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।

সেখানে বলা হয়, “এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ার প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে, অথবা শরণার্থীদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। স্থানান্তরের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জাতিসংঘের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য নেই।”

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচও (এইচআরডব্লিউ) বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

তাদের উদ্বেগের একটি কারণ ভাসান চরের ভৌগলিক অবস্থান। তারা বলছে, সাগরের মাঝে বিচ্ছিন্ন ওই দ্বীপে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে রোহিঙ্গারা কতটা নিরাপত্তা পাবে, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত নয়।

তাছাড়া সেখানে রেহিঙ্গাদের জন্য জরুরি সব মানবিক চাহিদা মেটানোর ব্যবস্থা থাকছে কি না- সে বিষয়েও নিশ্চিত হতে চায় তারা।

রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি এই দ্বীপে পৌঁছানোর পর প্রকল্প পরিচালক কমডোর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা এ প্রকল্প ঘুরে দেখে যেতে পারেন।”

তার দাবি, এক লাখ রোহিঙ্গার সাময়িক আশ্রয়ের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা ভাসান চরে করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য উঁচু বেড়ি বাঁধ করা হয়ে, ঘরগুলোও তৈরি করা হয়েছে উঁচু করে। আশ্রয়কেন্দ্রসহ অন্যান্য সুরক্ষামূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

বাক্স-পোটলা, পরিবার-পরিজন নিয়ে রোহিঙ্গারা যাচ্ছেন যার যার ঘরে।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, কেবল তাদেরেই সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

 “রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং অবশ্যই তাদের সে দেশে ফেরাতে হবে। অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের এই নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ তার সর্বোচ্চটা করছে।

“এই পর্যায়ে এসে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একমাত্র বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে দায়িত্ব নিয়ে এবং কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত হওয়া, সেটাই সমস্যার একমাত্র স্থায়ী সমাধান।

“একইসঙ্গে আমরা বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক চেষ্টাকে খাটো করা এবং ভুল ব্যাখ্যা না করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”